উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের বলেশ্বর নদী সংলগ্ন সিংজোড়-চন্ডিপুর গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে দাউরার খাল। দাউড়ার খালের পাশেই রয়েছে সিংজোড়-চন্ডিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিংজোড়-চন্ডিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও দাউরার (সেলিমগড়) বাজার।
সিডরের পরে এলাকাবাসী নিজস্ব অর্থায়নে বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করেন। সেটিই একমাত্র ভরসা এ এলাকার বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দুই বিদ্যালয়ের চার শতাধিক শিক্ষার্থী স্কুলে আসা- যাওয়া করে। এছাড়া প্রতিদিন এলাকার হাজার হাজার মানুষ এ সাঁকো পার হয়। বাধ্য হয়ে ছাগলসহ গবাদি পশু পার করেন এ সাঁকো দিয়ে।
স্থানীয় বাবুল শিকদার বাংলানিউজকে বলেন, সিডরের সময় বলেশ্বর নদীর স্রোতে কাঠের ব্রিজটি ভেঙে যায়। তারপর এলাকার লোকজনের কাছ থেকে সুপারি গাছ ও বাঁশ সংগ্রহ করে একটি সাঁকো তৈরি করা হয়। ওই সাঁকোতে নির্ভর করে চলে আমাদের যোগাযোগ। সম্প্রতি একটি বালুর ট্রলারের ধাক্কায় সাকোটি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখন এ সাঁকো দিয়ে পার হতে গেলেই আমাদের খুব ভয় করে।
সিংজোড়-চন্ডিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তামিমা বাংলানিউজকে বলে, সকালে বাড়ি থেকে স্কুলের পোশাক পরে রওনা দিয়ে যখন সাঁকো পর্যন্ত আসি, তখন মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে যদি পড়ে যাই। তারপরও স্কুলে যেতে হবে তাই জীবনে ঝুঁকি নিয়েই সাঁকোটি পার হই।
সিংজোড়-চন্ডিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এইচ এম আমিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি নিজেও প্রতিদিন এ সাঁকো দিয়ে পার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করি। শিক্ষার্থীদের সাঁকো পার হতে খুব কষ্ট হয়। বিশেষ করে বর্ষাকালে প্রায়ই শিক্ষার্থীরা সাঁকো থেকে পড়ে যায়। দাউরার খালের ওপর দিয়ে যদি একটি ব্রিজ হতো, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বাড়তো।
মোরেলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শাহ-ই-আলম বাচ্চু বাংলানিউজকে বলেন, এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কথা শুনে আমি নিজে দাউরার খাল এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের। উপজেলার তহবিলের সীমাবদ্ধতা স্বত্ত্বেও সেখানে যাতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয় সেজন্য আমি চেষ্টা করবো।
এ ব্যাপারে বাগেরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ওই খালের ওপর যেহেতু কোনো প্রকল্প নেই, তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারবো না।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৭ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৯
জিপি