ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘ধানে লোকসান, কিস্তি শোধে শ্রম বিক্রি করতে এসেছি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২২ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৯
‘ধানে লোকসান, কিস্তি শোধে শ্রম বিক্রি করতে এসেছি’

মাগুরা: ‘এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিন বিঘা জমিতে বোরো ধান বর্গা চাষ করেছিলাম। কিন্তু ধানের দাম না থাকায় কিস্তি শোধ দিতে পারিনি। এদিকে, এনজিওর লোক বাড়িতে এসে কিস্তির টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই ধান কাটা শ্রম বিক্রি করতে এসেছি।’

কথাগুলো বলছিলেন মাগুরার নতুন বাজারে শ্রম বিক্রি করতে আসা চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তি কাশেম মোল্ল্যা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, পরিবারের সদস্য সংখ্যা ১০ জন।

ধানের দাম না থাকায় এনজিওর কিস্তি টাকা শোধ করতে পারছি না। তাই চাপে পড়ে শ্রম বিক্রি করতে এসেছি। সরকার যদি ধানের দাম বাড়ায় তাহলে চাষিও বাঁচবে, শ্রমিকও বাঁচবে।

কালুখালী থেকে শ্রম বিক্রি করতে আসা গোলাম রব্বানী বাংলানিউজকে বলেন, সারাবছর শ্রমের দাম থাকে ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। এ টাকা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার খরচ ঠিক মতো চলে না। বছরের বেশিরভাগ সময় আমাদের কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন পার করতে হয়। এখন কাজের চাহিদা বেশি তাই শ্রমের বাজার বেশি।

মঘী গ্রাম থাকে ধান কাটা শ্রমিক কিনতে এসেছেন সাদিকুর রহমান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে বোর ধান চাষ করেছি। ধান চাষে খরচ হয়েছে ২৫-৩০ হাজার টাকার মতো। এদিকে বাজারে এক মণ ধানের দাম ৫-৬শ’ টাকা। তিন বেলা খাবারসহ শ্রমিকের শ্রমের দাম ৫৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা। এক মণ ধানের দামেও শ্রমিকের দাম হয় না। এভাবে চলতে থাকলে ধান চাষ বাদ দেওয়া ছাড়া উপায় দেখছি না।  

তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের দিন ৪৫০ টাকা দাম দিতে চেয়েছি তাও যেতে চাই না। বলছে প্রচণ্ড গরমের কাজ করতে কষ্ট হয় এজন্য তারা বলছে ৬৫০ টাকা দিন হলে কাজ করবে।

মাগুরা নতুন বাজারের ধান ব্যবসায়ী বলাই সাহা বাংলানিউজকে বলেন, শ্রমিক সংকটের কারণে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। সরকার যদি ধানের দাম বাড়াতো তাহলে কৃষকেরা লাভবান হতো।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জাহিদুল আমীন বাংলানিউজকে জানান, এ বছর চার উপজেলায় প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে বোর ধানের চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্র ছিল সাত মেট্রিক টন। ধানের উৎপাদন ভাল হয়েছে। আশা করছি চলিত মৌসুমে ২ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক ধান উৎপাদন হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।