ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় এবার আন্দোলনে পাটকল শ্রমিকদের শিশুসন্তান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪২ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০১৯
খুলনায় এবার আন্দোলনে পাটকল শ্রমিকদের শিশুসন্তান শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের শিশুসন্তানরা

খুলনা: বকেয়া মজুরি না পেয়ে অর্থাভাবে খুলনাঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকলের প্রায় অর্ধলাখ শ্রমিক চরম মানবেতর জীবনযাপন করছেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন কষ্টে। রোজা রেখে টানা ১১তম দিনের মতো বৃহস্পতিবার (১৬ মে) তারা বকেয়া মজুরিসহ নয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন।

প্রতিদিন তারা মিল গেটে বিক্ষোভ-সমাবেশ করছেন। বিকেলে তারা পালন করছেন রাজপথ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি।

 

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক বাবার সঙ্গে এখন আন্দোলনে যোগ দিচ্ছে পরিবারের সদস্যরাও। শ্রমিক পরিবারের শিশুরাও নেমে এসেছে রাজপথে। দাবি আদায়ে তারাও দিচ্ছে স্লোগান।  

পাটকল শ্রমিকরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে খালিশপুরের ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর ও দৌলতপুর এবং দিঘলিয়া উপজেলার স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা মিছিল সহকারে নগরীর নতুন রাস্তা মোড়ে এসে খুলনা-যশোর মহাসড়ক ও সংলগ্ন এলাকায় রেলপথ অবরোধ করেন। অবরোধস্থলে আসরের নামাজ পড়েন। ইফতার করেন এবং মাগরিবের নামাজ আদায় করে তারা ফিরে যান।  

এছাড়া আলিম ও ইস্টার্ন জুট মিলের শ্রমিকরা আটরা শিল্প এলাকায় এবং যশোরের নওয়াপাড়ার রাজঘাট এলাকার যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রি জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা একই কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনরত শ্রমিক নেতারা জানান, আমাদের নয় দফার মধ্যে অন্যতম তিনটি দাবি হচ্ছে, বকেয়া মজুরি পরিশোধ, মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন ও ঈদের আগেই উৎসব-ভাতা দেওয়া।

তারা জানান, ৫ মে (রোববার) বিকেল থেকে একে একে খুলনা-যশোর অঞ্চলের নয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের সাধারণ শ্রমিকরা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এর একদিন পর থেকে কর্মবিরতির পাশাপাশি বিকেল চারটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা রাজপথ-রেলপথ অবরোধসহ রাজপথেই আসর ও মাগরিবের নামাজ আদায় এবং ইফতারি করেন। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এ কর্মসূচি চললেও শুক্রবার শ্রমিকরা রাস্তায় নামেননি। শনিবার থেকে ফের একই কর্মসূচি শুরু করেছেন তারা।  

ক্রিসেন্ট জুট মিল সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন জানান, সরকার ঘোষিত জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশন-২০১৫ সুপারিশ বাস্তবায়ন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক কর্মচারীদের পিএফ, গ্র্যাচুইটি ও মৃত শ্রমিকের মিমার বকেয়া প্রদান, টার্মিনেশন, বরখাস্ত শ্রমিকদের কাজে পুনর্বহাল, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়োগ ও স্থায়ী করা, পাট মৌসুমে পাটক্রয়ের অর্থ বরাদ্দ, উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মিলগুলোকে পর্যায়ক্রমে বিএমআরই করাসহ প্রশাসন ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের দাবিগুলো এখনও বাস্তবায়ন না হওয়ায় আমরা রমজানের মধ্যেও রাজপথে আবার নামতে বাধ্য হয়েছি।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের সিবিএ সভাপতি ও পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন জানান, আগের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১৮ মে থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন এবং ১৯ মে থেকে অর্থ পরিশোধের কথা রয়েছে। ১৯ মের মধ্যে যদি প্রতিশ্রুতি পালন করা না হয়, তাহলে ২০ মে ঢাকায় জরুরি সভা ডেকে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। আর ২০ মে পর্যন্ত বর্তমান কর্মসূচি চলবে।  

বাংলাদেশসময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
এমআরএম/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ