ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগপ্রত্যাশীদের  উত্তীর্ণের অভিযোগ!

মাসুদ আজীম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, মে ১৬, ২০১৯
পরীক্ষা ছাড়াই নিয়োগপ্রত্যাশীদের  উত্তীর্ণের অভিযোগ!

ঢাকা: মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগ পরীক্ষায় নাম নেই। কিন্তু সেই পরীক্ষার ফলাফলে উত্তীর্ণের তালিকায় রয়েছে তাদের নাম। এমনকি এসব প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য পরবর্তী প্রক্রিয়াও শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। 

এমন অভিযোগ উঠেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসক নিয়োগের ক্ষেত্রে। এ নিয়ে গত ১২মে থেকে আন্দোলনে নেমেছেন চিকিৎসকদের একটি অংশ।

তাদের দাবি, এ নিয়োগ বাতিল করতে হবে।  

জানা যায়, গত ২০ মার্চ বিএসএমএমইউ-এর ১৮০ জন মেডিকেল অফিসার এবং ২০ জন ডেন্টাল সার্জন নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ৮ হাজার ৫৫৭ জন চিকিৎসক অংশ নেন। ওইদিন-ই (২০ মার্চ) লিখিত পরীক্ষর ফল প্রকাশিত হয়।

আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা জানান, লিখিত পরীক্ষয় এক পদের জন্য চারজন প্রার্থীকে পাস করানো হয়। এই হিসেবে ৭১৯ জন মেডিকেল অফিসার ও ডেন্টালের ৮১ জন মিলে মোট ৮২০ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই উত্তীর্ণের তালিকায় মোট ১১ জন চিকিৎসকের নাম ও রোল নম্বর পাওয়া গেছে যাদের পরীক্ষার সময় আসন বণ্টনের তালিকায় দেখা যায়নি।  

উত্তীর্ণ হওয়াদের মধ্যে ডা. মাহজাবীন আলী শাওন (৭০৯৫৭), ডা. আইরীন পারভীন (৭০৯৫৮), ডা. বুশরা জাহান (৭০৯৫৯), ডা. নুসরাত জাহান অর্থী (৭০৯৬০), ডা. নাজমুস সাকিব মুহাম্মদ নাফি (৮০৯৬১), ডা. আনোয়ারা (৮০৯৬২), ডা. সাবিনা রশিদ হিমা (৮০৯৬৩), ডা. আমেনা খাতুন (৮০৯৬৪), ডা. কাজী মেসবাহ উদ্দিন (৮০৯৬৫), ডা. নার্গিস আক্তার (৮০৯৬৬) এবং ডা. ফারজানা হক সুইটির (৮০৯৬৭) নাম ওই তালিকায় ছিলো না বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল হান্নান বলেন, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে নাই কিন্তু রেজাল্টে উত্তীর্ণের তালিকায় নাম আছে এমনটা সম্ভব না। আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা তাদের ক্ষোভ থেকে মনগড়া অভিযোগ দিচ্ছেন। তারা পারলে এটা প্রমাণ করুক। আমাদের অ্যাটেন্ডেন্ট শিট আছে, যেখানে ছবিসহ যাবতীয় তথ্য নিশ্চিত করে তারপর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে সবাই। এক্ষেত্রে এ রকম হওয়ার কোনো সুযোগই নেই।  

এদিকে চূড়ান্ত নিয়োগের ৫০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও ওই পরীক্ষার তারিখ এখনও ঘোষণা করা হয়নি।  

গত ১২ মে থেকে প্রতিদিন-ই উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার কার্যালয় ঘেরাও করে আন্দোলন করেছেন নিয়োগ বঞ্চিত চিকিৎসকেরা।  

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়ন করা হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে গত ১৩ মে বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন।

এ নিয়ে ১৪ মে উপাচার্যের দেখা না পেয়ে বিক্ষুদ্ধ চিকিৎসকদের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকতার কাছে কিছু তথ্য চেয়ে একটি আবেদনপত্র জমা দেয়। সেখানে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটিতে কারা ছিলেন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র, বয়স ৩২ ঊর্ধ্ব প্রার্থীর তথ্য এবং কর্তা ব্যক্তিদের আত্মীয় পরিচয়বাহী প্রার্থীর তালিকা চাওয়া হয়েছে।  

তবে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।  

এদিকে এসব দাবি নিয়ে গত ১৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সঙ্গেও দেখা করেছেন আন্দোলনরতরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক জানান, বিষয়টি নিয়ে তারা প্রক্টরকেও অবহিত করেছেন।

আর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।  

তবে এ বিষয়ে অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ।  

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, চিকিৎসকেরা মূলত আমার কাছে অন্য আরেকটি বিষয়ে এসেছিলেন। নিয়োগের বিষয়ে তেমন কথা হয়নি। এক্ষেত্রে আসলে কিছু করার নেই কারও। কারণ মেধার ভিত্তিতেই নিয়োগ হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
এমএএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।