ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইফতারে প্রাণ জুড়ায় ‘ঘোল’

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
ইফতারে প্রাণ জুড়ায় ‘ঘোল’ ইফতারে তৃপ্তি এনে দেয় সুস্বাদু ঘোল। ছবি: আরিফ জাহান

বগুড়া: দই থেকে বানানো একটি সুস্বাদু পানীয় ‘ঘোল’। অবশ্য অনেক এলাকায় এই পানীয় ‘মাঠা’ হিসেবে পরিচিত।

২৫০ বছরের ঐতিহ্য খ্যাত বগুড়ার দই থেকে তৈরীকৃত সুস্বাদু এই পানীয় এখানে ঘোল হিসেবে পরিচিত। যা পানে অন্যরকম তৃপ্তি আনে মানুষের মনে।

ঋতু বৈচিত্রের ধারায় বিদায় নেবে বৈশাখ। প্রকৃতিতে আগমন ঘটবে জ্যৈষ্ঠের। কিন্তু গরমের তেজ কমবে বলে মনে হয় না। কেননা প্রকৃতির নিয়মে জ্যৈষ্ঠে গরমের তীব্রতা বাড়ে। এই তীব্র তাপদাহের মধ্যেই রোজা পালন করে যাচ্ছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। দিনের গরম রোজাদারদের ক্লান্ত করে তৃষ্ণার্তের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ।

আর দিনশেষে সেই তৃষ্ণার্ত রোজাদারের প্রাণ জুড়াতে তৃপ্তি এনে দেয় ঘোল। তাই সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতার তালিকায় ঘোল রাখার চেষ্টা করেন রোজাদার ব্যক্তিরা। কারণ রোজাদারদের কাছে এখন এটি একটি পছন্দের পানীয়। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন রোজাদার ব্যক্তিদের পছন্দের শীর্ষে ঘোল নামের এই পানীয়।

বর্তমানে বাহারি ইফতার আইটেমের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই ঘোল। ইফতারে এনে দেয় বাড়তি মাত্রা। দুগ্ধজাত এ পানীয় অত্যন্ত সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। বছরের প্রায় বারো মাসই জেলার বিভিন্ন দই ও মিষ্টান্ন সামগ্রী বিক্রির দোকানে কমবেশি ঘোল পাওয়া যায়।

দোকানগুলোয় বিক্রি করা হয় বোতলজাত ঘোল। এছাড়া গরমের কয়েক মাস পাতিলে ভরে গ্লাসে করে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করা হয়। প্রকারভেদে প্রতি গ্লাস ঘোল ১০-২০ টাকা করে বিক্রি করা হয় বলে বাংলানিউজকে জানান ঘোল বিক্রেতা সুবোল ঘোষ। ইফতারে তৃপ্তি এনে দেয় সুস্বাদু ঘোল।  ছবি: আরিফ জাহানজানা যায়, দইয়ের জন্য দেশজুড়ে বগুড়ার আলাদা একটা খ্যাতি রয়েছে। মূলত জেলার শেরপুর উপজেলার ঘোষপাড়ায় প্রায় ২৫০ বছর আগে দই বানানো শুরু করেন কয়েকটি ঘোষ পরিবার। ওই সময়ে পাতলা দই হতো। যা চাহিদা অনুযায়ী ছোট-মাঝারি-বড় পাতিলে ভরে বিক্রি করা হতো। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে বর্তমানে পাতলা দইয়ের চাহিদা নেই বললেই চলে। সেখানে স্থান করে নিয়েছে ঘোল।

এ বিষয়ে নিমাই ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, জেলা শহরসহ উপজেলা শহরের প্রায় মিষ্টান্ন সামগ্রীর দোকানে এখন ঘোল বিক্রি করা হয়। তবে তা বোতলজাত করে বিক্রি করা হয়। স্পেশাল করে তৈরী করা হয় এই ঘোল। বছরের অন্য সময় বিক্রি হলেও রমজান মাসে ঘোল বিক্রি চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়।

ইফতার সামগ্রী কিনতে আসা মোস্তাফিজার রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গরমে সারাদিন শরীর থেকে পানি ঝরতে থাকে। এতে শরীরে পানি ও লবনের স্বল্পতা দেখা দেয়। তাই ইফতারে অন্য আইটেমের সঙ্গে ঘোল অনেক উপকারী।

রিংকি সুইটস’র সত্বাধিকারী শ্যামল বসাক বাংলানিউজকে বলেন, প্রকারভেদে বোতলজাত প্রতি লিটার ঘোল ১০০-১২০ টাকা, আধা লিটার ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। বছরের সব সময়ই ঘোলের দাম প্রায় একই থাকে। রজমান মাসে ব্যাপক চাহিদা থাকার পরও ঘোলের দাম বাড়েনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০১ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
এমবিএইচ/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।