রোববার (১২ মে) বিকেল ৩টার দিকে শহরের আলমনগর কলেজ রোডের মৎস্য ভবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসী জানায়, বাবা-মা কুষ্টিয়ায় থাকলেও দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে রংপুরের আলমনগর মৎস্য ভবন এলাকার নিজ বাড়িতে থাকতেন উজ্জ্বল। তার বাবা-মা কুষ্টিয়ায় মেয়ের বাড়িতে থাকেন। মাঝে মধ্যে তারা রংপুরে আসেন। পেশায় বেকার হলেও বাবার বাসা ও দোকান ভাড়া দিয়ে সংসার চালানো ও মাদক সেবন করতেন তিনি। অনেক আগ থেকে মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত থাকায় এক প্রকার বিকৃত মানসিকতা নিয়ে চলাচল করতেন তিনি।
বিকেল ৫টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উজ্জ্বলের বাড়ি সংলগ্ন মুদি দোকানে লোকজনের জটলা। সেখানে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বললে নাম প্রকাশ না করার শর্তে উজ্জ্বল হেরোইন সেবন করতেন বলে বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন একাধিক প্রতিবেশী।
তারা জানায়, প্রায় সময়ই মাদক সেবনের টাকা নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকতো তার পরিবারে। নেশার টাকা জোগাড় করতে না পেরে প্রতিনিয়ত এলাকায় নানান বিশৃঙ্খলা করতেন উজ্জ্বল। তবে টাকা না পেলে অন্যের থেকে বেশি নিজের শরীরের কোনো না কোনো ক্ষতি সাধন করতেন তিনি। তার এমন কার্যকলাপের ফলে বাধ্য হয়ে নেশার টাকা পরিবার থেকে দিয়ে দেওয়া হতো।
সকালে প্রতিদিনের মতো নেশার টাকার জন্য বাড়িতে বিশৃঙ্খলা শুরু করেন তিনি। পরে তার বাবা কামরুল ইসলাম ও স্ত্রী কিছু টাকা দিলেও দুপুরের দিকে আবার তিনি টাকা চেয়ে বসেন। এসময় কেউ তাকে টাকা না দিলে তিনি নিজ শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে এলাকাবাসী ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
সন্ধ্যার দিকে রমেক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তার শরীরের বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে। হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে।
এ বিষয়ে উজ্জ্বলের স্ত্রী নিলুফা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সকালে টাকা চাইলে আমি তাকে ১০০ টাকা দিয়েছিলাম। পরে আবার চাইলে কোনো টাকা না থাকায় আমি দিতে পারিনি। এসময় তিনি শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার জমির উদ্দীন বাংলানিউজকে বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৯
আরবি/