ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দুধ চুরি করতে যাওয়া সেই বাবা চাকরি পাচ্ছেন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৩ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৯
দুধ চুরি করতে যাওয়া সেই বাবা চাকরি পাচ্ছেন

ঢাকা: অর্থকষ্টে শিশু সন্তানের জন্য দুধ চুরি করতে যাওয়া সেই বাবার পাশে দাঁড়িয়েছে সেই সুপার শপ ‘স্বপ্ন’। প্রাথমিকভাবে সেই বাবাকে পুরো এক মাসের যাবতীয় বাজার দেওয়ার পাশাপাশি চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সুপার শপ স্বপ্নের একটি আউটলেট থেকেই বাবার দুধ চুরি করতে যাওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত হওয়ার পর এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালো স্বপ্ন।

শনিবার (১১ মে) সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটির হেড অব মার্কেটিং তানিম করিম বাংলানিউজকে ওই বাবাকে চাকরি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমাদের নির্বাহী পরিচালক সাব্বির হাসান নাসিরের নির্দেশে সেই বাবা এবং বাচ্চার দায়িত্ব নিচ্ছে সুপার শপ কর্তৃপক্ষ।

আমরা ইতোমধ্যে ওই বাবাকে খবর পাঠিয়েছি, আমি নিজে খিলগাঁও আউটলেটে আছি। তিনি এলে আপাতত এ মাসের প্রয়োজনীয় সব বাজার তাকে দিয়ে দেওয়া হবে।

তাকে চাকরি দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন নির্বাহী পরিচালক। সে অনুযায়ী রোববার (১২ মে) সকালে নির্বাহী পরিচালক নিজেই তার ইন্টারভিউ নেবেন। যোগ্যতা অনুযায়ী ওই বাবা চাকরি পাবেন।

রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় বাচ্চার জন্য এক বাবার দুধ চুরির ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) খিলগাঁও জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম। মুহূর্তেই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে গেলে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়।
 
পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘গতকাল রাত আনুমানিক ৮.৪৫ মিনিট। বাকি সড়কে চেকপোস্ট ডিউটি তদারকি করছিলাম। হঠাৎ এক জায়গায় মানুষের হট্টগোল দেখতে পেলাম। ঘটনা কি তা দেখার জন্য আমার এক সাব-ইন্সপেক্টরকে পাঠালাম। কিছুক্ষণ পর বেশ কিছু লোক ২৫-৩০ বছর বয়সী একজন লোককে টেনে-হিঁচড়ে আমার সামনে নিয়ে আসলো। ঘটনা জানতে চাইলাম। ’
 
একজন বলল, ‘স্যার, লোকটা চোর, চুরি করে পালাচ্ছিল। পাশে লোকটাকে শক্ত করে ধরে রাখা এক সিকিউরিটি গার্ড আমাকে বলল, ‘স্যার, লোকটা সুপার শপ থেকে চুরি করে পালাচ্ছিলো। ’

আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি চুরি করেছে? সিকিউরিটি গার্ড বলল, স্যার, সে এক প্যাকেট দুধ চুরি করে পালাচ্ছিলো। আমার খটকা লাগল, আমি জিজ্ঞেস করলাম, দুধ? তখন সিকিউরিটি গার্ড অতি উৎসাহ নিয়ে বলল, স্যার বাচ্চাদের ন্যান দুধের প্যাকেট। আমি লোকটার দিকে তাকালাম। আমার বয়সেরই হবে। দেখতে ভদ্রলোকই মনে হলো। তাকে জিজ্ঞেস করলাম, চুরি করলেন কেন? সে কেঁদে ফেলল। তারপর বলল, স্যার, তিন মাস হলো চাকরি নাই, বেতন নাই। ঘরে ছোট বাচ্চা, দুধ কেনার টাকা নাই।
 
সঙ্গে সঙ্গে আমার ছেলের চেহারা মনে পড়লো। মনে হলো কতটা নিরুপায় হলে একজন বাবা এ কাজ করতে পারে। ওর জায়গায় আমি থাকলেও হয়ত একই কাজ করতাম।
 
সিকিউরিটি গার্ডকে জিজ্ঞেস করলাম, দুধের প্যাকেটের দাম কত? সে বলল, ৩৯০ টাকা স্যার। আমি তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে বিল রাখতে বললাম এবং লোকটিকে ছেড়ে দিতে বললাম।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৯
পিএম/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।