ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সড়কের ওপর দোকান কেন?

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৯
সড়কের ওপর দোকান কেন?

ঢাকা: এই আলুর বস্তা কার? এই সবজির দোকান কার? সিগারেটের দোকান কার? সড়কের ওপর এমন দোকান কেন?- এভাবেই একের পর এক প্রশ্ন করছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। কিন্তু পাওয়া যাচ্ছিল না কোনো উত্তর। সামনে আসছিলেন না সড়ক দখল করে বসানো এসব অবৈধ দোকানের মালিকরাও।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচাবাজারে আকস্মিক পরিদর্শনে যান ডিএনসিসি মেয়র।

বাজার থেকে বেশ খানিকটা দূরে শেরশাহ শুরি সড়কে নিজের ও প্রটোকলের গাড়ি রেখে হেঁটেই বাজারের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।

এসময় সড়কের উভয় পাশে ফুটপাত দখল করে মালামাল রাখা বেশ কয়েকটি দোকানকে জরিমানা ও কয়েকটি দোকান সিলগালা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

এরপর শেরশাহ শুরি সড়ক থেকে টাউন হল কাঁচাবাজারের দিকে মোড় নিয়েই মূল সড়ক দখল করে গড়ে ওঠা দোকান দেখতে পান তিনি। একই সঙ্গে ফুটপাত দখল করে মালামাল রাখতেও দেখেন তিনি। এক পর্যায়ে প্যানেল মেয়র আলেয়া সরোয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ফুটপাত দিয়ে হাঁটা শুরু করেন তিনি। কিন্তু এগোতে পারেননি বেশিদূর।

সড়ক আর ফুটপাতে রাখা আলুর বস্তা ও ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা মুরগির দোকানের জালে আটকে পড়েন মেয়র ও প্যানেল মেয়র।  

তখন মেয়র বলে ওঠেন, এই আলুর বস্তা কার? কিন্তু আলুর মালিকানা দাবি করে সামনে আসেননি কেউই।

অন্যদিকে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সমেত মেয়রকে আসতে দেখে সড়কের ওপরে থাকা দোকানিদের অধিকাংশই তখন পালিয়ে যায়। সবজি ও মাংসের দোকান ছাড়াও চা-সিগারেটের টং দোকানিরাও তখন নিরুদ্দেশ।

কাঁচাবাজারের দোকানের সামনে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা এসব দোকান দেখে মেয়র বলেন, সড়কের ওপর এমন দোকান কেন?

এক পর্যায়ে কাঁচাবাজারের যেসব দোকানের সামনে এসব অবৈধ দোকান বসেছে, সেগুলোকেই জরিমানা করে অবৈধ দোকানগুলো বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন মেয়র। পরে কাঁচাবাজার দোকান মালিক সমিতির অনুরোধে সে সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসেন তিনি।

তবে আজকের মধ্যেই এসব দোকান সরানো না হলে, পরবর্তীতে কাঁচাবাজারের দোকানগুলোকে জরিমানা করে, অবৈধ দোকানগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলে তাদের হুঁশিয়ার করেন মেয়র।  

সেসময় এসব অবৈধ দোকান স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে উঠেছে বলে মেয়রকে অবহিত করেন বাজার মালিক সমিতির নেতারা। তখন এ বিষয়ে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়ে, মালিক সমিতিকে সম্মিলিতভাবে এসব দোকান উচ্ছেদে কাজ করার আহ্বান জানান মেয়র।

বাজার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে দেওয়া ব্রিফিং এ মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এখানে এসে দেখলাম ফুটপাত ও সড়ক দখল করে দোকানপাট বসানো হয়েছে। আমাদের সড়কগুলো খুব চওড়া হওয়া সত্বেও এসব কারণে পথচারীরা ঠিকমত হাঁটতে পারেন না। এ রমজান মাসে আমাদের নাগরিকেরা কষ্ট করবেন, তা হতে পারে না। আমি আজকের দিন সময় দিয়ে গেলাম। মালিকপক্ষের অনুরোধে জরিমানা বা উচ্ছেদ করলাম না। আমরা চাইও না কোনো ব্যবসায়ীকে জরিমানা করতে। বরং চাই সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে। তাই আমরা কিছু করার আগেই ব্যবসায়ীরা ভালো হয়ে যাক, তাই চাই।

এসময় মেয়র চলে যাওয়ার পর, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা এসব অবৈধ দোকান ফের বসবে কিনা?- এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আমি আজ এখানে এসেছি। কাল থেকে এখানকার আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ম্যাজিস্ট্রেট আসবেন। প্রয়োজনে এখানে লোকবল আরও বাড়াব। কিন্তু এই টাউন হল কাঁচাবাজার ‘ক্লিন’ চাই আমি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৯
এসএইচএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad