ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফেনীর নবী’তে ভিন্ন স্বাদের মুখরোচক ইফতার

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৫ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৯
ফেনীর নবী’তে ভিন্ন স্বাদের মুখরোচক ইফতার নবী হোটেলে ইফতারের বাহারি আয়োজন, ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: রমজানের দিন, দুপুর গড়িয়ে বিকেল আসার আগেই ফেনী শহরের ট্রাংক রোড়স্থ নবী হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউসের নানা স্বাদের মুখরোচক খাবারের সুবাস মনোযোগ আকৃষ্ট করে পথচারীদের। সেই সুবাস আরও উসকে যায় বিক্রেতার হাঁকডাকে। এক অন্যরকম আমেজে প্রতিবছর এ হোটেলটির ইফতারের আয়োজন যেনো উৎসবে পরিণত হয়। এই উৎসবে মিলনমেলা বসে রোজাদারদের। সাজানো হয় বাহারি ইফতারের পসরা।

বৃহস্পতিবার (০৯ মে) বিকেল ৩টা। ইফতারের আরও বেশ সময় বাকি।

প্রেস ক্লাবের সামনের নবী হোটেল অ্যান্ড বিরিয়ানি হাউসের ইফতার বিকিকিনির হাঁকডাক বেশ দূর থেকেই শোনা যাচ্ছে।

প্রতি বছরের মতো ফেনীর এ অভিজাত হোটেলটি এবারও আয়োজন করেছে ইফতারের বাহারি পদ। নানা স্বাদের এসব ইফতার আয়োজনে ক্রেতাদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মত। ১০ থেকে ১৫ জন বিক্রয়কর্মী হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতাদের সামলাতে।

বাংলানিউজকে ক্রেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে এ হেটেলের ইফতার তাদের পছন্দের তালিকায়। অনেকে বলছেন, নবীর ইফতার আয়োজন ফেনীর ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই হোটেলটিও ক্রেতার কথা মাথায় রেখেই তৈরি করছে লোভনীয়-মনোহরি ইফতার।

ক্রেতারা এও বলছেন, শহরের অন্যান্য হোটেলের চেয়ে নবীর ইফতার খাবারের জন্য বিখ্যাত।

বাহারি বিভিন্ন দামের ইফতার সামগ্রী কিনতে রোজা শুরুর প্রথম দিন থেকেই শহর ও এর আশপাশের এলাকা থেকে মানুষ আসছেন হোটেলটিতে। হোটেলটি সুস্বাদু ও মুখরোচক এবং ভিন্নতা দিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও সক্ষম হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, হোটেলটিতে ক্রেতা সাধারণের উপচে পড়া ভিড়। কেউ নিচ্ছেন ছোলা, পিঁয়াজু, খেজুর আবার কেউ নিচ্ছেন আস্ত মুরগির রোস্ট, ফ্রাই আবার কেউ নিচ্ছেন কাবাব। ক্রেতাদের অনেকেই নিতে ভুল করছেন না নবীর স্পেশাল হালিমও। রমজানে এ হোটেলের হালিমের রয়েছে বাড়তি কদর।

কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন কামালের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, খাবারে গুণগত মান বজায় রাখার কারণে প্রতি রমজানেই হোটেলে ক্রেতারা ভিড় জমান। পুরো রমজানেই বেচাকেনা থাকে জমজমাট। কেননা, বাজারের সবচেয়ে সেরা জিনিসটি হোটেলের জন্য কিনে নিয়ে আসি। আর তার সঠিক মান নিয়ন্ত্রণের পর, তা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিই।
নবী হোটেলে ইফতারের বাহারি আয়োজন, ছবি: বাংলানিউজ

তিনি আরও বলেন, এবারের ইফতার আয়োজনের মধ্যে রয়েছে মাটন ও চিকেন হালিম। যা কেজি ৩২০ টাকা ও বাটি ৮৫ টাকা। এছাড়া আয়োজনে থাকা বেগুনি প্রতি পিস পাঁচ টাকা, আলুর চপ প্রতি পিস পাঁচ টাকা, চানাবুট প্রতি কেজি ১২০ টাকা, পেঁয়াজু প্রতি পিস পাঁচ টাকা, সবজি চপ প্রতি পিস ১০ টাকা, ডিম চপ প্রতি পিস ২০ টাকা, চিকেন জালি কাবাব প্রতি পিস ২০ টাকা, মাটন জালি কাবাব প্রতি পিস ২০ টাকা, মাটন সমুচা প্রতি পিস ১০ টাকা, নারকেল সমুচা প্রতি পিস ১০ টাকা, পাটিসাপটা প্রতি পিস ২০ টাকা, সবজি রোল ২০ টাকা, মাটন রোল ২০ টাকা, চিকেন রোল ২০ টাকা, নার্গিস কোপতা ২০ টাকা, জিলাপি প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, পায়েস ও লাচ্ছা সেমাই প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, চিকেন ফ্রাই প্রতি পিস ১০০ টাকা, চিকেন মাসালা প্রতি পিস ১৫০ টাকা, গ্রিল কাবাব ১টা ৩৫০ টাকা, কাচ্চি বিরিয়ানি ১৮০ টাকা, চিকেন বিরিয়ানি ১৫০ টাকা, বিফ খিচুড়ি ১৩০ টাকা ও বোরহানি লিটার ১২০ টাকা; প্রতি গ্লাস ৩০ টাকা। এছাড়াও রয়েছে আরও নানা আয়োজন।

কথা হয় ইফতার কিনতে আসা কবির আহম্মদ নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নবী হোটেলে হরেক রকমের ইফতার তৈরি হয়। এখানের খাবার স্বাস্থ্যসম্মতও। আর সে কারণেই এখানে প্রতিবছর আসি ইফতার কিনতে।

আফসার উদ্দিন নামে আরেক ক্রেতা বাংলানিউজকে বলেন, আমি এ হোটেলের নিয়মিত ক্রেতা। এখানের রমজানের বাহারি আয়োজন আমাকেও মুগ্ধ করে। ঐতিহ্যের সঙ্গে এখানে মানের দিকটাও দেখা হয়। একটু বেশি দাম দিয়ে হলেও এখানের ইফতার সে কারণেই বাড়িতে কিনে নিয়ে যাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৯
এসএইচডি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।