এরআগে একই দিন সকালে এ বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে যায়। এ নদীতে একটু পানির চাপ হলেই পানিতে ভাসতে হয় উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বলেশ্বর নদীর তীরে বসবাসরত বগী, সাতঘর ও দশঘর এলাকার মানুষদের।
শনিবার (৪ মে) সকালে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরে এসে বাড়ি-ঘর, ফসলের মাঠে পানি দেখে হতবাক বলেশ্বর পাড়ের এ অসহায় মানুষগুলো।
ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধের ওপর দাঁড়িয়ে সাতঘর এলাকার সিয়াম বাংলানিউজকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণী থেকে রক্ষা পেতে পরিবারের সবাই মিলে শুক্রবার বিকেলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাই। সকালে যখন জানতে পারলাম ফণীর প্রভাব বাগেরহাটে তেমন পড়বে না। তখন বাড়িতে এসে দেখি ঘর ও উঠান পানিতে ডুবে আছে।
বগী-দশঘর জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাহফুজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বেড়িবাঁধের কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙনের ফলে আমাদের বাড়িঘর পানিতে ডুবে রয়েছে। হাঁস-মুরগির ঘর, গরুর গোয়াল, রান্নাঘর ও থাকার ঘর সবই পানির নিচে। এখন খুবই বিপদে আছি আমরা। আমাদের প্রাণের দাবি এ বাঁধটিকে সঠিকভাবে নির্মাণ করলে সুস্থভাবে বাস করতে পারতাম।
মোছাম্মত ছয়ফুল বেগম, হাওয়া বেগম, খাদিজা বেগমসহ কয়েকজন গৃহিণী বাংলানিউজকে বলেন, বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে চুলা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কিভাবে রান্না করবো? পরিবার-পরিজন নিয়ে কি খাব?
শুধু তাদেরই নয় উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগী, সাতঘর ও দশঘর এলাকার দুই শতাধিক পরিবারের একই অবস্থা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রিয়াদুল পঞ্চায়েত বাংলানিউজকে বলেন, শুধু ঘূর্ণিঝড় ফণী প্রভাবে নয় নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই এ এলাকার মানুষদের পানিতে ভাসতে হয়। অনেক সময় জানমালের বড় ক্ষতির মধ্যে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। দীর্ঘদিন ধরে আমরা দাবি করে আসছি, বলেশ্বর নদী শাসন করে বেড়িবাঁধ নির্মাণের। এ বাঁধটি নির্মাণ হলে আর যত্রতত্র ভাঙন হতো না।
নদী শাসন অন্তর্ভুক্তকরণ দাবি আদায় কমিটির আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম আকন বাংলানিউজকে বলেন, নদী শাসন না করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে তা কখনও টিকে থাকবে না। আবারও ভাঙবে, আবারও মানুষ মরবে, জমি-জমা ও ঘরবাড়ি হারাবে।
বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত শরণখোলা উপজেলার ৩৫/১ পোল্ডারের বগী, দক্ষিণ সাউথখালী অংশের বেড়িবাঁধ নির্মাণে নদী শাসন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করা দাবি জানা তিনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) তপন কুমার বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, জেলার আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এক লাখ ১৩ হাজার লোক আশ্রয় নিয়েছে। আমরা তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছি। প্রায় দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত ছিলো। সর্বোপরি ফণীর প্রভাবে বাগেরহাটে কোনো হতাহত হয়নি।
তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধটি নির্মাণাধীন রয়েছে। এখন ঠিকাদাররা কাজ করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৯
জিপি