ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজশাহী-রংপুর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে ‘ফণী’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৭ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৯
রাজশাহী-রংপুর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে ‘ফণী’ ঘূর্ণিঝড় ফণী

রাজশাহী: শেষ পর্যন্ত গতিপথ ঠিক থাকলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ খুলনার উপকূলে আঘাত হানার পর রাজশাহী ও রংপুর দিয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করতে পারে। 

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অন্তত তাই বলছে। তবে এটি পরিবর্তনও হতে পারে।

সব শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যার দিকে বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়বে ফণী। এর প্রভাব থাকতে পারে দুইদিন।  

যে কারণে শুক্রবার সারারাত ও শনিবার (০৪ মে) দিনভর বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে।  

আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ পুরো বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড়ের আওতায় থাকবে, এই সময়টা হবে ক্রিটিক্যাল। উচ্চগতির বাতাস ও দমকা ঝড়ো হাওয়ার সময় সবাইকে নিরাপদে থাকতে হবে। ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সারারাত বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাবে।

এদিকে, প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ফণী শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যে আঘাত হেনেছে। উড়িষ্যা থেকে এটি পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগোবে।  

পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার পর এটি আছড়ে পড়বে বাংলাদেশে। ঘূর্ণিঝড়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। আর সমুদ্র বা নদীবন্দর না থাকলেও রাজশাহী ও রংপুরের ওপর দিয়ে অতিক্রম করার কারণে এর স্থলভাগের ওপর দিয়ে ক্ষতচিহ্ন রেখে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  

যেমনটি হয়েছিল ২০০৯ সালের ঘূর্ণিঝড় আইলার সময়। ওই সময় অসতর্ক থাকায় ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির মুখে পড়েছিল রাজশাহীসহ গোটা উত্তরাঞ্চলের আবাদি ফসল, ঘর-বাড়ি ও গাছপালা।

ঘূর্ণিঝড় পূর্বাভাস সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ‘উইন্ডি ডটকম’ থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্রের বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, খুলনার উপকূলে আঘাত হানার পর শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি রাজশাহী ও রংপুর হয়ে বাংলাদেশ অতিক্রম করতে পারে।  দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে এর আগে খুব একটা বেশি স্থায়ী হয়নি ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে রাজশাহীর আবহাওয়া একেকবার একেক রূপ ধারণ করছে। ভোর ৫টা ২৯ মিনিটে সূর্যোদয়ের পর স্বাভাবিক নিয়মেই রোদ ওঠে। তবে সকাল ৮টার দিকে আকাশে মেঘ জমতে থাকে।  

এরপর সকাল ১০টা ৫মিনিটে বৃষ্টি শুরু হয়। তবে সেই বৃষ্টি মাত্র ১৫মিনিট স্থায়ী ছিল। এক পশলা বৃষ্টির পর ভ্যাপসা গরম বেড়ে যায়। আকাশও মেঘ মুক্ত হয়ে যায়। কিন্তু বাতাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আবহাওয়া এখন গোমট আকার ধারণ করেছে।  

দুপুর সোয়া ১২টার পর থেকে রাজশাহীর আকাশে আবারও মেঘ জমতে শুরু করেছে।  

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, বিপদ সংকেত রয়েছে দেশের সমুদ্র সৈকত ও নদীবন্দরে।  তবে আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি রাজশাহী ও রংপুরের ওপর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে।  

‘স্থলভাগের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ফণী বয়ে গেলে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে। এর প্রভাবে আজ রাত ও শনিবার দিনভর হালকা থেকে ভারী ঝড়-বৃষ্টির আওতায় থাকবে রাজশাহী। ’

তিনি জানান, শুক্রবার সকাল ১০টা ৫মিনিট থেকে ১০টা ১৫মিনিট পর্যন্ত রাজশাহীতে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। এ সময় শূন্য দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া সকাল ৬টায় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯১ শতাংশ এবং সকাল ৯টায় ৭৭ শতাংশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৯
এসএস/এমএ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।