ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে কাজ করবে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৯
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে কাজ করবে সরকার আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: আপত্তি থাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে সরকার কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, যেহেতু কয়েকটি ধারা নিয়ে সাংবাদিকদের থেকে আপত্তি উঠেছে, তাই গণমাধ্যম ব্যক্তিদের এক্ষেত্রে সহযোগিতা চাই।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘গণমাধ্যম চিত্র: পরিপেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা জানান তথ্যমন্ত্রী।

হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার চায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের বিকাশ। এখন থেকে ১০ বছর আগে যেখানে হাতে গোনা কয়েকটি পত্রিকা ছিলো, এখন কয়েক হাজার। ১০টা টেলিভিশন ছিলো না, এখন ৩৩টি টেলিভিশন আরও কিছু অনিয়ারের অপেক্ষায় আছে। অনলাইন ছিলো দু’একটি এখন কয়েক হাজার অনলাইন পত্রিকা, এতে গণমাধ্যমের বিকাশ যেমন হয়েছে, তেমনি হয়েছে বড় সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান। দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যে সরকারের পক্ষে গণমাধ্যমে কোনো চাপ নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে আপত্তি উঠেছে এগুলো নিয়ে আলোচনা হবে। এতে গণমাধ্যম ব্যক্তিদের সহযোগিতা পাবো বলে বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, সব দেশেই ডিজিটাল নিরাপত্তায় আইন আছে, আমাদের নিরাপত্তায়ও আইন হয়েছে। কোনো কোনো জায়গাতে এর অপপ্রয়োগ হয়েছে। আমরা চাই কিভাবে এর অপপ্রয়োগ বন্ধ করা যায়। এ নিয়ে সরকার ও গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, দেশের সাংবাদিকতা পেশা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এ পেশায় এসে অনেক সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। ঝুঁকি থাকলে আর কেউ আসতে চাইবে না। এ পেশায় ঝুঁকি কমিয়ে আনতে হবে।

সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারার কারণে এর অপপ্রয়োগ থেমে নেই। নির্বাচনের দিন ডিসির তথ্য দিয়ে নিউজ করায় ট্রিবিউন ও মানবজমিনের খুলনা প্রতিনিধিকে আইসিটি আইনের মামলার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হলো। অথচ নুসরাতকে নির্যাতনের ছবি ভাইরাল করে দেওয়ার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নামে মামলা হলো, গ্রেফতার হলো না। পুলিশের পক্ষে বলা হচ্ছে, তদন্তের পর গ্রেফতার, আমরাও এটা চেয়েছিলাম একটা তদন্তের পর গ্রেফতার করা হোক। কিন্তু কোনো তদন্তের আগেই গ্রেফতার হয়রানির শেষ নেই।

দৈনিক সংবাদের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খন্দকার মুনিরুজ্জামান বলেন, আমরা কেউ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিপক্ষে নয়। সবাই চেয়েছি এ আইন করা হোক। আইন হলো, পাসও হলো। তবে এ আইনে এমন কিছু ধারা সংযোগ করা হয়েছে, যেগুলো স্বাধীন সংবাদ পরিবেশনে বিপদজনক।

এখানে বলা হয়েছে, একজন উপ-পরিদর্শক (এসআই) যদি মনে করে কোনো সাংবাদিকের কম্পিউটারে রাষ্ট্রের জন্য হুমকি এমন তথ্য আছে, তাহলে বিনা ওয়ারেন্ট কম্পিউটার জব্দ, অফিস সিলগালা ও গ্রেফতার করতে পারবে। আমরা এর সংশোধন চেয়েছিলাম, আমাদের আশ্বাসও দেয় হয়েছিলো। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফল পাইনি, তবে অপপ্রয়োগ দেখতে পেয়েছি।

প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম মুকুল বলেন, একটি দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতা থাকলে জনগণ ও সরকার উপকৃত হয়। কিন্তু এখন সংবাদ পরিবেশনের আগেই ভাবতে হয় এটা করলে কতোটি মামলা খেতে হবে। যা আমাদের জন্য কাম্য নয়।

ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের উপস্থাপনায় আলোচনা সভা আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, প্রেসক্লাব সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন ও সিনিয়র সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৯
ইএআর/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।