ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বরিশাল-ঝালকাঠিতে ‘ফণী’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি-ব্যবস্থা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৭ ঘণ্টা, মে ২, ২০১৯
বরিশাল-ঝালকাঠিতে ‘ফণী’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি-ব্যবস্থা ছবি : প্রতীকী

বরিশাল: পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ প্রবল আকার ধারণ করছে। দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোতে এ কারণে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে। এরইমধ্যে সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতিমূলক কার্যকম সম্পন্ন করে রাখছেন সংশ্লিষ্টরা। সে ধারাবাহিকতায় দেশের দক্ষিণের জেলা বরিশাল ও ঝালকাঠিতে জরুরিসভা করেছে জেলা প্রশাসন। 

সভায় উপজেলা প্রশাসনকে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের বিষয় ও দুর্যোগ মোকাবেলায় সতকর্তামূল প্রচার-প্রচারণা জরুরি ভিত্তিতে চালানো, সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সকল উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মস্থলে অবস্থান করা, প্রয়োজনীয় সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রাখা, শুকনো খাবার,  উপজেলা জেলার স্বাস্থ্য চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা, এনজিওকর্মীদের সব ধরনের প্রস্তুতি, বরিশাল বেতারকে হালনাগাদ আবহাওয়ার তথ্য প্রচার করা, পুলিশ বাহিনীকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রস্তুত থাকা, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে উপকূলীয় স্থানে সতর্ক থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

বরিশাল জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবেলায় বরিশাল জেলায় ২৩২ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি জরুরি সংবাদ দেওয়ার জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মোট ১১টি নিয়ন্ত্রণকক্ষ বা কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।  এছাড়াও দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফ সাংবাদিকদের জানান, ‘ফণী’ আঘাত হানলে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক সাহায্যের জন্য ৪০০ মেট্রিকটন চাল, নগদ সাত লাখ টাকা এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. মনোয়ার হোসেন জানান, জেলার প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তত রাখার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলাগুলোতে বেশকিছু মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে।

অপরদিকে ঝালকাঠিতে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন মাতুব্বরের সভাপতিত্বে বুধবার বিকেলে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভাসূত্রে জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র কারণে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে।

‘ফণী’ আঘাত হানলে ক্ষতিগ্রস্তদের তাৎক্ষণিক সাহায্যের  জন্য ৩৪২ মেট্রিক টন চাল এবং পর্যাপ্ত শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সভায় জেলার ৪৫ সাইক্লোন শেল্টারসহ পাকা শিক্ষা ভবন, উপাসানালয় খুলে আশ্রয় নেওয়ার উপযোগী করার জন্য নির্দেশনা এবং আবহাওয়ার গতিবিধি বুঝে যথাসময়ে মাইকিং ও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে জনসাধারণকে সতর্ক করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) খোলা হয়েছে।

এদিকে জেলার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানাগেছে, জেলা সদর হাসপাতালে ১টি ও ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩২টি ইউনিয়নে ৩২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যাতে দুর্যোগকালীন ও পরবর্তীতে দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

অপরদিকে বরিশাল ও ঝালকাঠিতে উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সর্বসাধারণকে দূর্যোগের বিষয় সতর্ক করার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময় : ০২৫৭ ঘন্টা, মে ০২, ২০১৯

এমএস/এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।