ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ইলিশের অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৪ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৯
ইলিশের অপেক্ষায় ব্যবসায়ীরা বরিশালের পোর্টরোডে অবস্থিত বেসরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ইলিশের চিত্র

বরিশাল: প্রজনন মৌসুমের কারণে দেশের ৬টি অভয়াশ্রমে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা ছিলো। এর মধ্যে ৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত ১২টায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর থেকেই জেলেরা অভয়াশ্রমগুলোতে ইলিশ শিকারে নেমেছেন।

যদিও এখন পর্যন্ত বরিশালের পোর্টরোডে অবস্থিত একমাত্র বেসরকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে এর প্রভাব পড়েনি। তবে বৃহস্পতিবার (০২ মে) থেকে ইলিশের আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারের চিত্র বদলাতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বর্তমানে ইলিশের আমদানি কম থাকায় বাজারে ইলিশসহ সব মাছের দাম বাড়তি বলে জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (০১ মে) বরিশাল পোর্টরোডের রসুলপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, খুবই স্বল্প পরিমাণে দেশীয়সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে অবতরণ কেন্দ্রটিতে। আর যে ইলিশ আজ এ অবতরণকেন্দ্রে এসেছে মোকামের তুলনায় তা খুবই কম। তাই অনেকটা ফাঁকা বাজারে অনেকেই ইলিশ কেনায় আগ্রহ দেখাননি। আর যে ইলিশওবা পাওয়া গেছে তার মধ্যে মাঝারি আকারের ইলিশের পরিমাণই বেশি। অল্প কিছু শ্রমিক ইলিশের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করলেও কর্মযজ্ঞের সচলতার ছাপ দেখা যায়নি অবতরণ কেন্দ্রে। আবার হাতেগোনা কয়েকটি বরফ ভাঙার কল চালু থাকলেও বেশিরভাগই নিস্তব্দতার মধ্য দিয়ে দিন কাটিয়ে দিচ্ছে।  

মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে পাইকারি বাজরে মণপ্রতি কেজি সাইজের ইলিশ ৭২ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১ কেজি ২শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকায় এবং দেড়কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২০ থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায়।
 
অপরদিকে কেজির নিচের ৬ থেকে ৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ মণপ্রতি ৫৩-৫৪ হাজার টাকায়, ৫শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৩৮ থেকে ৪০ হাজার এবং সবচেয়ে ছোট গোটলা ইলিশ ২৬ থেকে ২৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এ দর বিগত কয়েকদিন ধরেই স্থির রয়েছে।

ইলিশ না থাকায় আড়তগুলো প্রায় খালি 
 
আড়তদার মো. নাছির উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, অভয়াশ্রমে ২ মাসের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজারে ইলিশের পরিমাণ অনেক কম।  তবে গতকাল নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর রাত ১২টা থেকেই অধিকাংশ জেলে ইলিশ শিকারে নেমেছেন। বাকিরা আজ সকালে নেমেছেন। আগামীকাল সকাল থেকে ইলিশের আমদানি কিছুটা বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। ইলিশের আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবতরণ কেন্দ্রে কর্মযজ্ঞ যেমন শুরু হবে তেমনি দরের পতন ঘটবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে মাছের পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুর রব বলেন, বর্তমান সময়টা ইলিশের মৌসুম নয়, এসময় নদীতে পানি কম থাকে, ইলিশসহ সব মাছই কম থাকে। জেলেরা নদীতে নেমেছেন ঠিকই তবে আশানুরূপ মাছের খবর মেলেনি এখনো। বাজারে বর্তমানে আমদানি কম থাকায় সব মাছের দামই চড়া। যেমন মাসখানেক আগে ৩শ’ টাকা কেজির টেংরা এখন ৫শ’ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে।

তিনি বলেন, আষাঢ়ের আগে ইলিশের আমদানি আশানুরূপ বাড়ার সম্ভাবনা নেই। সে সময় ইলিশের আমদানি যেমন বাড়বে তেমন অন্য সব মাছের আমদানি বাড়বে। তবে আগামী ২০ মে থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা। এবারই প্রথম কার্যকর হতে যাওয়া ৬৫ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা জেলে-ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভোগান্তিতে ফেলবে। কারণ ইলিশের মৌসুমটাও তখন থাকবে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদি নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ শিকার শতভাগ নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ বন্ধ রাখা যায় তবে বছরের বাকি সময়গুলোতে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যেতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৯
এমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad