ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

অস্বাভাবিক কিছু দেখলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে হবে

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৯ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৯
অস্বাভাবিক কিছু দেখলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে হবে

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: কোথাও অস্বাভাবিক কিছু দেখলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য আবারও সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রূখে দাঁড়াতে হবে। সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করে চলতে হবে।

কোথাও কোনো অস্বাভাবিক কিছু দেখলে সবাই যেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খবর দেয়।  

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিনগত রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।  

পুঁজিবাজারের সমস্যা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা করছি। এ নিয়ে আমরা বৈঠকও করেছি। এটা নিয়ে খুব বেশি শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। পুঁজিবাজার নিয়ে কেউ কোনো ধরনের গেম খেলার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, ব্যবস্থা নেবো। এখানে গেলে লাভও হবে, লোকসানও হতে পারে। এটা জেনেই তো সবাই বিনিয়োগ করেন। সরকার থেকে যা যা করার তা করে যাচ্ছি। পুঁজিবাজার তো অনেকটা জুয়া খেলার মতো। কোন কোম্পানি কিনলে লাভ হবে, সেটা বিবেচনা বিনিয়োগকারীদেরই করতে হবে। তবে পুঁজিবাজার নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই।  

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবুজ আমাদের জাতীয় পতাকার রং। এ সবুজের মধ্যে লাল রং দিয়ে বাংলাদেশ লেখা হয়েছিল। আইসিসির আপত্তির কারণে তা পরিবর্তন করে সাদা লেখা হয়েছে। এটাতে পাকিস্তানের জার্সির সঙ্গে মেলানোর কিছু নেই, ঠিক হবে না।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দেশের মানুষের কল্যাণেই কাজ করে যাচ্ছি। ধারাবাহিকভাবে আমরা ক্ষমতায় থাকতে পেরেছি বলেই বাংলাদেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ দেশ। দেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা, সেই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ ক্ষুধামুক্ত দেশ হয়েছে, দারিদ্র্যমুক্তও হবে।  

জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে কিছু মানুষকে ব্যবহার করা হয় মানুষ হত্যার জন্য। তাদের দিয়ে মানুষ হত্যা করানো হয়, বলা হয় তারা বেহেস্তে যেতে পারবে। নিরীহ মানুষকে হত্যা করে বেহেস্তে যাবে, এটা কীভাবে চিন্তা করে? মানুষ হত্যা তো মহাপাপ। যারা নিরীহ মানুষকে হত্যা করে তারা কীভাবে বেহেস্তে যাবে? যারা এদের ব্যবহার করে ধর্মান্ধ করছে, মানুষকে হত্যা করাচ্ছে, যারা শিক্ষাটা দিচ্ছে, তারা আগে কেন বেহেস্তে যাচ্ছে না? যারা এ শিক্ষাটা দিয়ে ধর্মান্ধ করছে, তারা ভাবছে তারা বেহেস্তের না-কি খুব কাছে পৌঁছে যাচ্ছে! যারা এ শিক্ষাটা দিচ্ছে তারা আগে কেন বেহেস্তে চলে যায় না, আর বেহেস্তের পথ অনুসরণ করে না? যারা শিক্ষা দিচ্ছে তারা তো নিজেরা মরছে না। অবাক লাগে কিছু সম্পদশালী ধনী পরিবার উচ্চশিক্ষিত পরিবারও ধর্মান্ধের পথে যাচ্ছে। আমি জানি না যারা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়, তারা কীভাবে এভাবে ধর্মান্ধ হয়ে যায়? 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখলকারীরা বাংলাদেশ উন্নয়ন হোক তা কখনও চায়নি। বাংলাদেশ ভিক্ষুকের জাতিতে থাকুক, ক্ষুধার্ত মানুষকে দেখিয়ে বিদেশ থেকে সাহায্য এনে লুটেপুটে খাওয়া, এটাই ছিল তাদের নীতি।  

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পানির জন্য হাহাকার ছিল। আমরা সেই সমস্যার সমাধান করেছি। কিছু জায়গায় পানির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেখানে পানি জমা হয়, সেই ট্যাঙ্ক নিয়মিত পরিষ্কার করা হবে। পানি দিয়ে শরবত বানিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে ট্যাঙ্কি পরিষ্কার কি-না, তা আগে দেখুন। যদি ওয়াসা এক্ষেত্রে দায়ী থাকে, তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবির জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩৫ বছরে যদি কেউ চাকরিতে প্রবেশ করে, ট্রেনিং নিতে নিতে তাদের বয়স ৩৮ বছর হয়ে যাবে। ৩৮ বছরে যে চাকরিতে প্রবেশ করবে তাকে ২২ বছর পর অবসর নিতে হবে, তারা তো পূর্ণাঙ্গ পেনশন পাবে না। তাই এমন দাবি তো বাস্তবসম্মত নয়। ২১-২৫ বয়সীদের মধ্যে মেধা, মনন ও দক্ষতা বেশি থাকে। বয়সসীমা বাড়ানো হলে নতুন চাকরি দেওয়া যাবে না। কেউ রিটারমেন্টে যাবে না, পদ খালি হবে না, তাই চাকরি দেয়াও যাবে না। শুধু দাবি তুললেই হবে না, যারা আন্দোলন করেন তাদের এসব বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৯
এসকে/আরএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।