ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বনলতার বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু, খাবারে সন্তুষ্টি

শরীফ সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
বনলতার বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু, খাবারে সন্তুষ্টি স্টেশনে দাঁড়ানো বনলতা এক্সপ্রেস

রাজশাহী: বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করলো রাজশাহী-ঢাকা রুটের একমাত্র বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৭টার নির্ধারিত সময়েই যাত্রী নিয়ে ট্রেনটি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে।

ট্রেন ছাড়ার পরপরই রেলওয়ের পক্ষ থেকে যাত্রীদের মধ্যে খাবার পরিবেশন করা হয়। প্রথম দিনেই খাবারের মান নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা।

এর আগে গত ২৫ এপ্রিল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ওই দিন বেলা পৌনে বারোটায় রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় বনলতা এক্সপ্রেস’র উদ্বোধনী ট্রেনটি। মাত্র ৪ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটে ওই ট্রেন ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছায়। বঙ্গবন্ধু সেতুর এপারে কেবল একবার বিরতি দেয় ট্রেনটি। প্রথম দিনে বিনা টিকিটেই বনলতায় ভ্রমণ করার সুযোগ পান রেলওয়ের যাত্রীরা।

তবে শনিবার থেকে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করলো রাজশাহী-ঢাকা রুটের একমাত্র বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস। এর মধ্যে দিয়ে রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো।  

রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট আমজাদ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, যাত্রা শুরুর প্রথম দিনেই হাউসফুল ছিল বনলতা এক্সপ্রেস। আজকের টিকিট বিক্রি করা হয়েছিল গত ২৫ এপ্রিল রাত ৮টায়। কাউন্টার থেকে টিকিট ছাড়ার পর পরই প্রথম দিনের এসি (স্নিগ্ধা) ও ননএসি অর্থাৎ শোভন শ্রেণীর সবগুলো টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। বর্তমানে অন্যান্য ট্রেনের মতোই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) অথবা জন্মনিবন্ধনপত্রের ছায়াকপি দিয়ে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনসহ সবগুলো কম্পিউটারাইজড স্টেশন থেকে বনলতার টিকিট কাটতে পারছেন যাত্রীরা।

এছাড়া অনলাইনেও পাওয়া যাচ্ছে বনলতার টিকিট। একজন যাত্রী ইচ্ছে করলে যাত্রার ১০ দিন আগেই টিকিট কাটতে পারছেন। একটি এনআইডি দিয়ে চারটি করে টিকিট কাটতে পারছেন যাত্রীরা। রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে 'রেলওয়ে সেবা' অ্যাপ দিয়েও টিকিট কাটতে পারবেন যাত্রীরা। রেলওয়ে অ্যাপ এর মাধ্যমে ৫০ শতাংশ টিকিট ছাড়া হবে। আগামীকাল ওই অ্যাপ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার কথা রয়েছে রেলপথমন্ত্রীর।  

এদিকে, বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটির বাণিজ্যিক যাত্রার প্রথম দিনেই খাবার নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে শোনা গেছে অধিকাংশ যাত্রীকে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের কোনো ট্রেনে খাবার দেওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। বনলতা এক্সপ্রেসে ৫২৫ টাকার শোভন ও ৮৭৫ টাকার এসি (স্নিগ্ধা) শ্রেণীর টিকিটে যাত্রীদের জন্য এই খাবার মূল্য সংযোজন করা হয়েছে। যাত্রা শুরুর পর ট্রেনের যাত্রীদের হাতে হাতে পৌঁছে যায় বনলতার এক্সপ্রেসের খাবার।

যাত্রীদের জন্য পরিবেশন করা খাবারবিরতিহীন বনলতায় ভ্রমণকারীদের বিদ্যমান ভাড়ার সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ ভাড়া যোগ করা হয়েছে। এর সঙ্গে ১৫০ টাকার খাবার বিলও যুক্ত হয়েছে। যাত্রীদের জন্য এই খাবার সরবরাহ রেলওয়ের পক্ষ থেকে সৌজন্যমূলক বলা হলেও এর মূল্য পরিশোধ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অত্যাধুনিক এই ট্রেনটিতে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রথম নিজস্ব ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম সার্ভিসেসের (বিআরসিটিএস) মাধ্যমে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।  

খাবার প্যাকেটে একটি বার্গার, ভেজিটেবল রোল, কেক, টমেটো সস দেওয়া হয়েছে যাত্রীদের। সঙ্গে মিনারেল ওয়াটারের বোতল এবং চা পরিবেশন করা হয়েছে। বনলতার এই আপ্যায়নে প্রথম দিনে তাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে দেখা গেছে যাত্রীদের। তবে এর মান শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারবে কিনা তা নিয়েও যাত্রীদের সংশয় প্রকাশ করতে দেখা গেছে। সব মিলিয়ে রাজশাহী-ঢাকা রুটের যাত্রীদের জন্য ভ্রমণে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বিরতিহীন আন্তঃনগর ট্রেন বনলতা এক্সপ্রেস। ট্রেনটিতে ভ্রমণ করতে পেরে প্রথম দিনেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা।

বর্তমানে রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলাচল করে আন্তঃনগর ট্রেন পদ্মা, ধূমকেতু ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস। পুরনো ইঞ্জিনে এসব ট্রেনও চলে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার গতিবেগে। মাঝে যাত্রাবিরতি রয়েছে ১৪টি স্টেশনে। এতে রাজশাহী থেকে ঢাকা পৌঁছাতে সময় লাগে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা।

সময়সূচি অনুযায়ী, বনলতা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে রাজশাহী পৌঁছবে সন্ধ্যা ৬টায়। রাজশাহী থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছাবে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে। বিরতিহীন চার্জ হিসেবে বিদ্যমান ভাড়ার সঙ্গে কেবল ১০ শতাংশ অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে ভ্রমণকারীদের।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।