ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বিএনপি দল হিসেবে টিকবে, প্রশ্ন শেখ হাসিনার

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৯
বিএনপি দল হিসেবে টিকবে, প্রশ্ন শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকবে কি-না? এমন প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী দল ক্ষমতার বাইরে থাকলে টিকে থাকতে পারে না।

ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের (এমপি) শপথগ্রহণে সরকারের থেকে কোনো চাপ নেই বলেও জানান তিনি।  

ব্রুনেইয়ে সরকারি সফর নিয়ে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকবে কি না- এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এদের সৃষ্টিটা কোথা থেকে সেটাও তো আপনাদের দেখতে হবে! এদের তৈরি হয়েছে কাদের দিয়ে, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, হত্যা ক্যু, ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে। দেশের রাষ্ট্রপতি হত্যা করে যারা ক্ষমতা দখল করেছে তাদের দ্বারা যদি দল গঠন করা হয়। সেই দল থাকবে কি না, সেটাই বিষয়।  

লম্বা সময় ক্ষমতার বাইরে থাকা সামরিক ছত্রচ্ছায়ায় জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া বিএনপির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষমতা দখলকারী অবৈধ দল, তারা ক্ষমতায় থাকতে পারলে টিকে থাকে। ক্ষমতার বাইরে থাকলে টিকে থাকতে পারে না। কারণ তাদের শিকড়ে জোর নাই। তাদের শিকড়ই নাই।

টানা তিনবারসহ চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বর্ণলতা যখন কোনো একটা গাছের উপর পড়ে দেখতে কিন্তু খুব সুন্দর লাগে। কিন্তু স্বর্ণলতা কিন্তু গাছটাকে ধ্বংস করে দেয়। এই সমস্ত দল যখন তৈরি হয়েছে, তখন খুব চোখ ধাঁধানো সুন্দর, সোনালি স্বর্ণলতা দেখা গেছে, খুব ভালো। অনেকেই সেখানে ছুটে গেছে। এদের তো শিকড় নাই। কাজেই তাদের অবস্থা যদি নাজুক হয় এর দায়-দায়িত্ব কার? যারা সে দল চালাচ্ছে, নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদের।

ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিতদের শপথ নিতে সরকারের চাপ নেই

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের (এমপি) যারা শপথ নিয়েছে তারা স্বেচ্ছায় গিয়ে শপথ নিয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যে জনপ্রতিনিধিরা শপথ নিয়েছে এখানে সরকারের কিন্তু কোনো চাপ নেই। আমরা চাপ দিতে যাবো কেন?

শেখ হাসিনা বলেন, তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত, তারা নিজেরাই বলছে, তাদের সংসদীয় আসনের জনগণই চায়। জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে তারাই চাপ দিচ্ছে, তারা বলছে। এজন্য তারা শপথ নিয়েছে। যারা শপথ নিয়েছে তারা বলছে যে, তারা সংসদে গিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে কথা বলবে।

‘শপথ নিয়ে তারা সংসদে এসেছে, তারা তাদের কথা বলবে। এখানে আমাদের দোষ দেয়ার কী আছে। আর বিএনপি একটা রাজনৈতিক দল যেটাই তারা করুক সেটা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। একটা দল নিজেই তার সিদ্ধান্ত নেবে। এখানে অন্য কোনো দল তাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারে না। ’

খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির আবেদন হয়নি, মন্তব্যের কিছু নেই

খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্যারোলের জন্য কিন্তু আবেদন করতে হয়। সাধারণত প্যারোল তখনই পায় আবেদন করলে। কিন্তু এখানে কিন্তু কেউ আবেদন করেনি এখনও। যেহেতু আবেদন করেনি, সেহেতু এ ব্যাপারে কমেন্ট করার কিছু নেই, আমাদের বলার কিছু নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়াকে কিন্তু আমরা রাজনৈতিকভাবে গ্রেফতার করিনি। খালেদা জিয়ার তার দুর্নীতির কারণে কোর্টের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত এবং সেই শাস্তি সে ভোগ করছে। আর সেই মামলাটাও কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার করেনি। মামলাটা করে গেছে তত্বাবধায়ক সরকার।

ভাসমান নয়, আওয়ামী লীগ পোড় খাওয়া রাজনৈতিক দল

আওয়ামী লীগ একটি পোড় খাওয়া রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ হচ্ছে পোড় খাওয়া রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বিরোধী দলে থেকে আওয়ামী লীগের সৃষ্টি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগে একটা সিস্টেম আছে, এটা ভাসমান রাজনৈতিক দল নয়। আমরা সবসময় গঠনতন্ত্রটা মেনে আমরা কাজ করি।

‘পাকের ঘর থেকে নয়, স্কুল জীবন থেকে রাস্তায় মিছিল করে রাজনীতিতে এসেছি’-এমন কথা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বলতে গেলে এখানে সব থেকে প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা আমি, এটাও ভুলে যাইয়েন না। ৭২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ৬০ বছরই রাজনীতিতে কেটেছে।

আওয়ামী লীগে নতুন নেতৃত্ব দলই ঠিক করবে জানিয়ে তিনি বলেন, অবসর তো নিতেই হবে, অবশ্যই। এখানে কে নেতৃত্বে আসবে এটা দল ঠিক করবে, এটা আমি ঠিক করবো না। আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব বেছে নিবে। তারা তাদের নেতা বেছে নেবে। সেখানে আমি কি বলে যাবো যে অমুক হবে তমুক হবে। আমরা এটা করবো না, করিও না। আমিও তো কোনোদিন ভাবি নাই, আমি আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট হবো।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ওই ধরনের সুবিধাবাদী, অনুপ্রবেশকারী এখনও দেখি না। আর কিছু লোক আসবে কিছু লোক যাবে এটা রাজনীতিতে থাকে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
এসকে/এমইউএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।