ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন মাত্রার প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন মাত্রার প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট ফাইল ছবি

ঢাকা: বাসার ছাদ, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক, কারাগার, খেলার মাঠ, জনবসতি এলাকা, হেরিটেজ ও প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকাসহ জনসমাগম স্থানে বসানো মোবাইল ফোন কোম্পানির টাওয়ার থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশনের মাত্রা নিয়ে একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট। 

রেডিয়েশনের মাত্রায় জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ক্ষতি ও ঝুঁকি নির্ণয় এবং সেখান থেকে টাওয়ার অপসারণের জন্য সমীক্ষা করে চার মাসের মধ্যে এ প্রতিবেদন দেবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)।  

পরিবেশবাদী ও মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট আবেদনে জারি করা রুলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।

রায়ে বিদেশ থেকে আমদানি করা মোবাইল ফোন সেটের রেডিয়েশন বিষয়ক এসএআর মান নির্ণয় করে তা প্রতিটি ফোন সেটে প্রদর্শন করা যায় কিনা সে জন্যও সমীক্ষা চালাতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার কাজী জিনাত হক।

মনজিল মোরসেদ জানান, রায়ে আদালত মোট ১১ দফা নির্দেশনা দেন।  

টাওয়ার থেকে নিঃসৃত রেডিয়েশনের বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারন্যাশনাল কমিশন অন নন-আইওনাইজিং রেডিয়েশন প্রোটেকশন (আইসিএনআইআরপি) কর্তৃক নির্ধারিত বিকিরণমাত্রা প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪ দশমিক ৫ ওয়াট। আমাদের দেশে এর চেয়ে কম রয়েছে। এ প্রতিবেদনে আপত্তি জানিয়ে তা দশমিক ৪৫ মাত্রায় আনার নির্দেশনা চান রিট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।  

এ বিষয়ে তিনি বলেন, যেসব দেশের ভিত্তিতে এ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেসব দেশ শীত প্রধান। সেখানে জনবসতি কম। কিন্তু আমাদের দেশ উষ্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ।  

তিনি এক্ষেত্রে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া একটি রায় তুলে ধরে বলেন, ওই রায়ের পর আন্তর্জাতিক মাত্রা নির্ধারণের পর ভারত নিজের দেশের প্রেক্ষাপটে মাত্রা নির্ধারণ করেছে।  

সেলফোন টাওয়ারের রেডিয়েশন নিঃসরণ নিয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে পরিবেশবাদী সংগঠন এইচআরপিবি।  
 
ওই সময় হাইকোর্ট রেডিয়েশনের মাত্রা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখতে নির্দেশ। বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানকে বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির কয়েকটি মোবাইল ফোন টাওয়ার পরিদর্শন করে রেডিয়েশন বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলেন।

এ নির্দেশের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে। ওই বিশেষজ্ঞ কমিটি ২০১৩ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তিন দফা সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন দেন। এ কমিটি মতিঝিল, গুলশান ও মিরপুর এলাকায় ছয়টি মোবাইল কোম্পানির ১৮টি টাওয়ারের (প্রত্যেকটির তিনটি করে) বিকিরণ সরেজমিন পরিদর্শন করে এ প্রতিবেদন দেয়।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব টাওয়ারের মধ্যে মাত্র একটি টাওয়ারে মাত্রাতিরিক্ত রেডিয়েশন পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের দেওয়া নির্দেশনার আলোকে বিটিআরসি নীতিমালা করে। পরবর্তীতে আদালতের দেওয়া আদেশের আলোকে আরও কয়েক দফা এ নীতিমালা সংশোধন করে আদালতে দাখিল করে বিটিআরসি।  

মনজিল মোরসেদ আরও জানান, আদালত এ মামলাটিকে চলমান রেখেছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ০০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৯
ইএস/এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।