এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) ‘মেয়াদ শেষ, তবুও বন্ধ হয়নি সিলেটের বাণিজ্যমেলা’ শিরোনামে বাংলানিউজে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এরপর বুধবার (২৩ এপ্রিল) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. আমিনুল ইসলাম মেলা কর্তৃপক্ষের বর্ধিতকরণ আবেদন নাকচ করে দেন।
এ সংক্রান্ত নির্দেশনার অনুলিপি সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার কর্তৃপক্ষ, রাজম্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, আমদানি-রফতানি প্রধান নিয়ন্ত্রক, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে পাঠানো হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে মেলার কার্যক্রম বন্ধে পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। ফলে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে মাসব্যাপী চলে আসা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। অথচ মেলা বন্ধে একাধিক নির্দেশনা পাওয়ার পরও পুলিশ কোনো পদক্ষেপে যায়নি। উপরন্তু মেলা কর্তৃপক্ষ মেয়াদ বাড়ানোর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ১৫ এপ্রিল করা দরখাস্তের ইস্যু দেখিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকে।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) মেলা বন্ধ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনুমতি ছাড়াই ২৪ এপ্রিল রাত পর্যন্ত ৯দিন চলে মেলার কার্যক্রম। অবৈধ পন্থায় চলে আসা মেলায় পুলিশ ফোর্সও মোতায়েন রাখা হয়।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা গত ৯ মার্চ শুরু হয়ে ৮ এপ্রিল সম্পন্ন হওয়ার কথা। মেলা বন্ধে গত ৭ এপ্রিল ও ১১ এপ্রিল মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজকে নির্দেশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য পরে মেলা কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাতদিনের মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত নেয়।
মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি ১১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশকে একটি স্মারকে জানায় মন্ত্রণালয়। ওই নির্দেশনার পরে সোমবার (১৫ এপ্রিল) মেলার কার্যক্রম বন্ধের কথা থাকলেও সেটা করেননি সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, মেলার মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের এক কর্মকর্তা বাণিজ্যমেলায় পুলিশ পাহারায় বাণিজ্যমেলা টিকিয়ে রাখেন। যাতে আবারও মেলার মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন এনে সচল অবস্থায়ই শুরু করা যায়। কিন্তু তা আর সম্ভব হয়নি।
সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আগেও মেলা বন্ধ করতে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। বুধবার রাতে সব সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের মুখপাত্র জেদান আল মুছা বাংলানিউজকে বলেন, মেলা প্রাঙ্গণ থেকে পুলিশও সরিয়ে আনা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক পুলিশ মেলা বন্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
এদিকে মাসাধিক কাল ধরে চলে আসা বাণিজ্যমেলার কারণে সিলেটের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ তুলেন।
মেলার বিপক্ষে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সিলেটে পর পর দু’টি বাণিজ্যমেলা হওয়াতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের মতে, আমরাও ট্যাক্স ভ্যাট দিয়ে ব্যবসা করি। বারবার বাণিজ্যমেলার অনুমতি না দিয়ে আপামর ব্যবসায়ীদের স্বার্থের কথা চিন্তা কর্তৃপক্ষের করা উচিত।
অভিযোগ রয়েছে, সিলেট শাহী ঈদগাহ মাঠের মেলা কার্যক্রম বন্ধ হলেও মেলা কর্তৃপক্ষ এবার অন্ধ কল্যাণ সমিতির ব্যানারে সদর উপজেলার বটেশ্বরে মেলার আয়োজন করেছে। মেলার সব সরঞ্জাম বটেশ্বরে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত একই মাঠে চলে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এরপর গত ৯ মার্চ সিলেট সদর উপজেলার শাহী ঈদগাহ মাঠে মাসব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৯
এনইউ/এএটি