তিনি বলেন, ১৯২৭ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। ঢাকা ত্যাগের পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খয়রা অধ্যাপক’ হিসেবে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে ভারত সরকার তাকে জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত করে।
মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে 'সত্যেন্দ্রনাথ বসু: তাঁর বিস্তীর্ণ জীবন' শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক ও ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ডিপার্টমেন্ট অব ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের সহযোগী অধ্যাপক ড. আহমাদ মোস্তফা কামাল।
আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও বোস সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্ট্যাডি অ্যান্ড রিসার্চ ইন ন্যাচারাল সায়েন্সেসের পরিচালক অধ্যাপক সুপ্রিয়া সাহা, বরেণ্য পদার্থ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. অজয় রায় এবং বরেণ্য পদার্থ বিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক ড. সুলতানা শফি।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহমেদ।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. আহমাদ মোস্তফা কামাল আরো বলেন, বহুদর্শী বিজ্ঞানী সতেন্দ্রনাথ বসুর জন্ম, শিক্ষা, কর্মজীবন, গবেষণা, স্বীকৃতি ও সম্মাননা, কোয়ান্টাম পরিসংখ্যান ও বোস-আইনস্টাইন তত্ত্বসহ বিজ্ঞানে তার সামগ্রিক অবদানের নানা দিকে অনস্বীকার্য। সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন একজন বাঙালি পদার্থবিজ্ঞানী। তার গবেষণার ক্ষেত্র ছিল গাণিতিক পদার্থবিদ্যা। সত্যেন্দ্রনাথ বসু আলবার্ট আইনস্টাইনের সঙ্গে যৌথভাবে বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান দেন, যা পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বলে বিবেচিত হয়।
আলোচনায় অধ্যাপক সুপ্রিয়া সাহা বলেন, পৃথিবীতে পদার্থবিজ্ঞানী অনেকেই আছেন, কিন্তু সত্যেন্দ্রনাথ বসুকে আমরা বিশেষভাবে স্মরণ করি কারণ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে তার বিজ্ঞান সাধনা করেছিলেন। বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশকে পৃথিবীর ইতিহাসে তুলে ধরেছেন। তার ভেতরে জাতীয়তাবোধ ছিল প্রখর। গৌরবময় জীবনের ২৪টি বছর কাটিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে।
অধ্যাপক ড. সুলতানা শফি বলেন, পদার্থ বিজ্ঞান অন্য সব বিষয়গুলোর মতো নয়, এটি হচ্ছে বিশেষ ধরনের আলাদা বিজ্ঞানশাস্ত্র। গণিত, পরিসংখ্যান হচ্ছে পদার্থ বিজ্ঞানের মূল বিষয়। কোয়ান্টাম কণার বিন্যাস বিশ্লেষণে সত্যেন্দ্রনাথ বসুর অবদান অপরিসীম। তার বিজ্ঞানচর্চায়, বিজ্ঞান সাধনায় ও বিজ্ঞান গবেষণায় আইনস্টাইন ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন।
অধ্যাপক ড. অজয় রায় সত্যেন্দ্রনাথ বসুর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ব্যক্তি হিসেবে তিনি ছিলেন বিপ্লবী, অনেক মেধাবী ও বুদ্ধিমান। সত্যেন্দ্রনাথ বসু যে বিশেষ কারণে এতো খ্যাতি অর্জন করেছেন সেটি হলো কোয়ান্টাম কণার বিন্যাস নিয়ে কাজ করা। তিনি তার মহৎ কাজের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০১৯
এইচএমএস/এএ