ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নামমাত্র মজুরি বাড়লেও প্রকৃত পক্ষে ২৬ শতাংশ কমেছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
নামমাত্র মজুরি বাড়লেও প্রকৃত পক্ষে ২৬ শতাংশ কমেছে

ঢাকা: সুশাসনের ঘাটতি থাকায় তৈরি পোশাক খাতে রানা প্লাজার মতো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। 

তিনি বলেন, ভয়াবহ রানা প্লাজা দুর্ঘটনার ষষ্ঠ বার্ষিকী বুধবার (২৪ এপ্রিল)। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত সব শ্রমিককে ন্যায্য পাওনা ও পুনর্বাসন করতে হবে।

এখনও রানা প্লাজার ৫১ শতাংশ শ্রমিক বেকার রয়েছেন। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। রানা প্লাজার মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে মালিকপক্ষ মনে করবে, আইন অমান্য করে পার পাওয়া যায়।  

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত ‘তৈরি পোশাক খাতে সুশাসন: অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকার গার্মেন্টস খাতের ব্যবসায়ীদের উৎসকর ও ভ্যাট প্রত্যাহারসহ নানা সুবিধা দিয়েছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এটাকে আমরা স্বাগত জানাই। তারা মুনাফা করছে, রফতানি আয় হচ্ছে, প্রাধান্য পায় মালিকের মুনাফা। কিন্তু শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দেওয়া হয় না। উৎসকর মওকুফ এটা ইতিবাচক। নূন্যতম মজুরি বাস্তবায়ন করা হলেও এখানে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। মজুরি বাড়ানোর আন্দোলনে পাঁচ হাজার শ্রমিককে মামলা করে হয়রানি করা হয়। শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি হওয়া উচিত ১৭ হাজার টাকা। গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বাস্তবে কমেছে, যদিও সাধারণ দৃষ্টিতে মজুরি বেড়েছে। বাস্তব কথা হচ্ছে, নানা আইনের ফাঁক দেখিয়ে মজুরি ২৬ শতাংশ কমানো হয়েছে।  

টিআইবির এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নেতারা ৪৪ লাখ শ্রমিককে চাকরি দিয়েছেন বলে গর্ব করেন। প্রকৃতপক্ষে তারা লাভবান হয়েছেন। তাদের মানসিকতা বদলায়নি। শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দেওয়া হচ্ছে না। গত কয়েক বছরে প্রায় ১২শ’ কারখানা বন্ধ করা হয়েছে। প্রায় চার লাখ শ্রমিক বেকার হয়েছেন। কিন্তু তাদের পাওনা দেওয়া হয়নি। যে অগ্রগতি হয়েছে, এটা টেকসই করার জন্য পর্যাপ্ত উদ্যোগ নয়।  

রাজউকের আওতাধীন এলাকায় বাইপাস করে ভবনের অনুমোদন আগের মতো অব্যাহত রয়েছে। রানা প্লাজায় পাঁচতলার অনুমোদন নিয়ে অষ্টমতলা ভবন করা হয়েছে। এই অনিয়ম অব্যাহত রয়েছে।  

দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) সুফল সবার পাওয়ার অধিকার রয়েছে মন্তব্য করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, যদিও সবাই সুফল পাচ্ছে কি না, এটা প্রশ্ন রয়ে গেছে।  

গত ৬ বছরে গার্মেন্টস সেক্টরে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু তা পর্যাপ্ত নয়। সরকার ও মালিকপক্ষ আইন অনুযায়ী মাতৃত্বকালীন ছয় মাসের প্রাপ্য ছুটি পাওয়ার কথা থাকলেও শ্রমিকরা চার মাস পায়। এই বৈষম্যও কমিয়ে আনতে হবে।  

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির নাজমুল হুদা মিনা। অনুষ্ঠানে টিআইবির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
টিএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad