ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দৃশ্যমান হলো পদ্মাসেতুর ১৬৫০ মিটার

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
দৃশ্যমান হলো পদ্মাসেতুর ১৬৫০ মিটার ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর একাদশ স্প্যান, ছবি: বাংলানিউজ

মুন্সিগঞ্জ: একের পর এক স্প্যান বসানোর মাধ্যমে পূরণের পথে ট্রেনে কিংবা গাড়িতে চড়ে পদ্মাপাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন। জাজিরা প্রান্তে সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর একাদশ স্প্যান ‘৬-সি’ বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো এক হাজার ৬৫০ মিটার। 

জাজিরা প্রান্তে নয়টি স্প্যানে দৃশ্যমান এক হাজার ৩৫০ মিটার। আর ৩০টি স্প্যান বসানোর মাধ্যমেই সেতুর আকৃতি দেখাবে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।

 

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৯ টা ২০ মিনিটে সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর ধুসর রংয়ের ১৩ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থ, ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের ‘৬-সি’ স্প্যানটিকে নির্ধারিত পিলারে ওপর দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় সফলভাবে বসানো হয়েছে। মাওয়া প্রান্তে দশম স্প্যান বসানোর ১৩ দিনের মাথায় বসলো একাদশ  স্প্যানটি।

এর আগে সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল ৮টায় মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ৩ হাজার ৬০০ টিন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ক্রেন বহন করে রওয়ানা দেয়। এরপর সকাল সোয়া ১০টায় পৌঁছায় নির্ধারিত পিলারের কাছে।

পদ্মাসেতুর উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর বাংলানিউজকে জানান, জাজিরা প্রান্তে সফলভাবে সেতুর ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয় ‘৬-সি’ স্প্যানটি। পুরো পদ্মাসেতুতে ১১টি স্প্যান বসানোর মাধ্যমে দৃশ্যমান হলো সেতুর এক হাজার ৬৫০ মিটার। এছাড়া মাওয়া প্রান্তে ১৪ ও ১৫ নম্বর পিলারের ওপর বসবে ১২তম স্প্যানটি। এরজন্য মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ‘৩-বি’ রং করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৫৫ টি কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া জাজিরা প্রান্তে রেলওয়ে বক্স স্ল্যাব বসেছে ২৮৮টি, রোডওয়ে বক্স স্ল্যাব ৬টি।

পদ্মাসেতু প্রকল্প সূত্র বলছে, স্প্যান বহনকারী ক্রেনটিকে ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে নোঙর করে রাখা হয়। পজিশন করে রাখার পর ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে পিলারের উচ্চতায় উঠানো হয় স্প্যানটিকে। এরপর রাখা হয় পিলারের বেয়ারিংয়ের ওপর। ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর রাখা স্প্যানের সঙ্গে জোড়া দেওয়া হবে স্প্যানটিকে। পরবর্তী স্প্যান ‘৬-বি’ সেতুর ৩২ ও ৩৩ নম্বর পিলারের ওপর বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।  

জানা যায়, শরীয়তপুরের জাজিরায় এখন দশটি পিলারে (৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩৭, ৩৮, ৩৯,৪০, ৪১ ও ৪২) ৯টি স্প্যান। এছাড়া মাওয়া প্রান্তে (১৩, ১৪ ও ৪, ৫) নম্বর পিলারে একটি স্থায়ী স্প্যান ও একটি অস্থায়ী স্প্যান বসানো হয়েছে।

জাজিরা প্রান্তে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বসানো হয় প্রথম স্প্যান। এর প্রায় চার মাস পর ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যানটি বসে। দেড় মাস পর ১১ মার্চ এ প্রান্তে ধূসর রংঙের তৃতীয় স্প্যান বসানো হয়। দুই মাস পর ১৩ মে বসে চতুর্থ স্প্যান। এক মাস ১৬ দিনের মাথায় পঞ্চম স্প্যানটি বসে ২৯ জুন। তারপর ছয় মাস ২৫ দিনের মাথায় ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি বসে ষষ্ঠ স্প্যানটি। এর ২৮ দিনের মাথায় ২০ ফেব্রুয়ারি বসে সপ্তম স্প্যানটি। এর একমাস পরে ২২ মার্চ বসে অষ্টম স্প্যানটি।  নবম স্প্যান বসানোর ১৯ দিনের মাথায় ১০ এপ্রিল বসে দশম স্প্যানটি। আর মাওয়া প্রান্তে একটিমাত্র অস্থায়ীভাবে স্প্যান বসানো হয় ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর।

পদ্মাসেতুতে ৪২টি পিলারের ওপর বসবে ৪১টি স্প্যান। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। জাজিরায় স্প্যানগুলোতে রেলওয়ে স্ল্যাব ও রোডওয়ে স্ল্যাব বসানোর কাজ চলমান আছে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৯
ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad