কথাগুলো বলছিলেন ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। সম্প্রতি আগুনে পুড়িয়ে নির্মমভাবে তাকে হত্যা করে তারই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার দোসর ও তার সহপাঠীরা।
নুসরাতের ভাই নোমান বলেন, আমাদের পুরো পরিবারের মধ্য মনি ছিলো আমাদের বোনটি, যেন সবার নয়নের মনি। শবে বরাতের রাতে বোন হালুয়া-রুটি ও সুস্বাদু খাবার রান্না করতো। সবাইকে নিয়ে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে রাতটা পার করতো। কিন্তু এ বছর শব-ই বরাতের রাতে আমাদের বোনটি আর বেঁচে নেই, খুনিরা তাকে বাঁচতে দেয়নি।
তিনি বলেন, আমরা এ ভাগ্য রজনীতে মহান আল্লাহ রাব্বুল আমিনের কাছে বোনের রুহের মাগফেরাতের জন্য দোয়া করেছি। বোন যেন জান্নাতের বাসিন্দা হতে পারে সে জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করেছি। এর পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে এ নির্মম হত্যার বিচারও চেয়েছি।
নোমান বলেন, আমরা সরকারের কাছেও আমাদের বোনের হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে আর কোনো ভাই বোন হারিয়ে আর্তনাদ করতে না হয়। বোনের শূন্যতার ডুকরে ডুকরে কাঁদতে না হয়।
সোমবার (২২ এপ্রিল) সোনাগাজী আল হেলার একাডেমির পাশে সামাজিক কবরস্থানে কবর জেয়ারতের সময় উপস্থিত ছিলেন সোনাগাজী প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল হান্নানসহ নুসরাতের পরিবার ও স্বজনরা।
গত ৬ এপ্রিল সকালে নুসরাত আলিমের আরবি পরীক্ষা প্রথম পত্র দিতে গেলে মাদ্রাসায় দুর্বৃত্তরা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ দিনপর ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায়।
পরদিন ১১ এপ্রিল বিকেলে তার জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪/৫ জনকে আসামি করে নুসরাতে ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। ১০ এপ্রিল থেকে মামলাটির দায়িত্ব পায় বিপিআই। সেই থেকেই গ্রেফতার হতে থাকে আসামিরা। এ পর্যন্ত গ্রেফতার হয় ২০ জন আসামী, আদালতে জবাবন্দি দিয়েছে সাতজন।
বাংলাদেশ সময়: ০২৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৯
এসএইচডি/এনটি