কিন্তু ঘণ্টাখানেক পর আবারও সেখানে ফিরতে হলো তাদের। চিরঘুম দিয়ে তাদের স্থান হলো হাসপাতালের মর্গে।
বিলাপ করছিলেন, ‘কতক্ষণ আগে হাসপাতালে আইছিলো, আবার হাসপাতালেই শেষ ঘুম দিলো। ’
শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালের মর্গে কথা হচ্ছিলো খায়রুলের সঙ্গে।
তিনি জানান, তার দুলাভাই ও বোন থাকতেন তারাকান্দা উপজেলার রায়জান এলাকায়।
নগরীর শম্ভুগঞ্জ ব্রিজ সংলগ্ন স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি চালিত অটো রিকশা নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন। পথে স্থানীয় আলালপুর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে।
সদর উপজেলার আলালপুরে ট্রাকচাপায় নিহত সিএনজিচালিত অটোরিকশার আরো দুই যাত্রী ইউনুস (৬২) ও কুদ্দুস (৫০) ফিরছিলেন ঢাকা থেকে। মাত্র একদিন আগে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) নিজের মেয়েকে ঢাকার মধ্য বাড্ডায় বিয়ে দেন তিনি।
মেয়েকে বিদায় জানিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নশ্বর পৃথিবীকেই বিদায় জানালেন ইউনুস।
আহাজারি করে সেই কথাই যেন জানাচ্ছিলেন ইউনুস ও কুদ্দুসের ভাই ইব্রাহিম (৫২)। মর্গে দুই ভাইয়ের মরদেহ বুকে চেপে আর্তনাদ করছিলেন। তার আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে সেখানকার বাতাস।
ইব্রাহিম জানান, মাসকান্দা বাস টার্মিনাল থেকে নেমে সিএনজি চালিত অটো রিকশাযোগে বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন তার দুইভাই।
আঞ্চলিক ভাষায় ইব্রাহিম বলেন, ‘মাইয়ডারে (মেয়েকে) বিয়া দিয়া (বিয়ে দিয়ে) কষ্ট লইয়্যাই (কষ্ট নিয়েই) বাড়ি ফিরছিলো ভাই। কিন্তু আমগর (আমাদের) কারো মুখ দেখবার পাইলো না। এর আগেই সব শেষ হইয়্যা গেলো। আমগর (আমাদের) দুই ভাই আমগরে (আমাদের) ছাইড়া (ছেড়ে) চইল্ল্যা (চলে) গেলো। ’
এর আগে শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টার দিকে সদর উপজেলার শম্ভুগঞ্জ থেকে আলালপুরগামী একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজি চালিত অটো রিকশাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই ৪ জনের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৯
এমএএএম/এমএ