ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চোরের হাতে খুন হন মেডিকেল অফিসার মারুফা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৯
চোরের হাতে খুন হন মেডিকেল অফিসার মারুফা পুলিশের হাতে গ্রেফতার খুনি মো. মহসিন শেখ

ব‌রিশাল: বরিশাল মেট্রোপলিটনের বিমান বন্দর থানাধীন কাশিপুর এলাকায় মেডিকেল অফিসার মারুফা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমান বন্দর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুর রহমান মুকুল।

তিনি জানান, পেশাদার চোরের হাতে খুন হন মারুফা। এ ঘটনায় গ্রেফতার মো. মহসিন শেখ (৩২) পিরোজপুর জেলার খানাকুনিয়ারী এলাকার মো. মোস্তফা শেখের ছেলে এবং একজন পেশাদার চোর।

শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে ঘাতক চোর মহসিনের বর্ণনার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মহসিন একজন পেশাদার চোর। সে ভোলায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করে। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ঘাতক মহসিন ভোলা থেকে বরিশাল নগরে এসে রূপাতলীর একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেন।

চুরির উদ্দেশে ওইদিন দিনের বেলা মারুফার বাসা ও আশপাশ ঘুরে দেখে।  ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ১টার পর পাশের নির্মাণাধীন ভবন থেকে মারুফার ফ্লাটের পার্শ্ববর্তী ভবনের ছাদে শাবল নিয়ে অবস্থান নেয়।  সেই ছাদ থেকে চুরি করার উদ্দেশে মারুফার ফ্লাটের বেলকনিতে প্রবেশ করে। বেলকনির দরজা খোলা থাকায় সে ফ্লাটে ঢুকে মারুফার বিছানার পাশে শাবল রেখে চেয়ারের ওপরে থাকা ভেনিটিব্যাগ নিয়ে বেলকনি দিয়ে পাশের বাসার ছাদে চলে যায়। ভেনিটিব্যাগ তল্লাশি করে ৩০/৪০ টাকা পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ফের মহসিন মারুফার ঘরে প্রবেশ করে খোলা অবস্থায় থাকা স্টিলের আলমারি তল্লাশি শুরু করে।  

শব্দ পেয়ে মারুফা জেগে উঠে চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকলে মহসিন তার শাবল দিয়ে মারুফার মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে মারুফা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।  

মারুফার গোঙানি আর রক্ত দেখে মহসিন দ্রুত বেলকনি দিয়ে পাশের ভবনের ছাদে চলে যায়। সেখানে নির্মাণাধীন আরেকটি ভবনের ফজরের আজান পর্যন্ত অবস্থান করে। তারপর আজানের সময় ওই ভবন থেকে নেমে লঞ্চে করে ভোলা চলে যায়।

এদিকে প্রতিদিনের মতো ৩০ সেপ্টেম্বর (ঘটনার পরের দিন) সকালে জহুরুল হায়দার চৌধুরী স্বপন তার স্ত্রী মারুফাকে ঘুম থেকে ওঠানোর জন্য মোবাইলে ফোন দেন। স্ত্রী ফোন রিসিভ না করার বাড়িওয়ালাকে বিষয়টি জানান। কিন্তু অনেক ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় ফ্লাটটি খুলে মারুফার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ছয়মাস পর বিমান বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আলম মুন্সী মারুফার ঘাতক মহসিনকে চট্টগামের পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে ১৭ এপ্রিল (বুধবার) আটক করা হয়।  

মারুফা বিমান বন্দর থানাধীন ২ নং কাশিপুর ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্বামী জহুরুল হায়দার চৌধুরী পন প্রগতি ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে সহকারী ব্যবস্থাপক (উন্নয়ন) হিসেবে ঢাকার মিরপুর শাখায় চাকরি করতেন। তারা নিঃসন্তান দম্পতি ছিলেন। মারুফা চাকরির সুবাদে বরিশালের লুৎফর রহমান সড়কে বহুতল একটি ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্লাটে ভাড়া থাকতেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৯
এমএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।