ওসি মোয়াজ্জেম ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিনকে বাঁচাতে প্রশাসন ও একটি গোষ্ঠী অপতৎপর বলেও সমাবেশ থেকে অভিযোগ করা হয়।
পরে এই সমাবেশ থেকে নুসরাত হত্যাকাণ্ডসহ নারী নির্যাতন ও ধর্ষণবিরোধী রোডমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমাবেশে প্রগতিশীল আন্দোলনকর্মী আকরামুল হক বলেন, এক দু’জন সদস্যের কারণে পুরো পুলিশ প্রশাসনের বদনাম কখনও কাম্য নয়। দ্রুত গতিতে নুসরাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে আইনের শাসন নিশ্চিত করা হোক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সোনিয়া আমিন প্রশাসনের ভেতরে থাকা ধর্ষক-খুনির আশ্রয়দাতাদের খুঁজে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। বিচারহীনতার রাষ্ট্র থেকে উত্তরণের জন্য আইনের শাসন সুনিশ্চিত করাই সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ও গবেষক মেজবাহ কামাল যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীজোটের দাবির সঙ্গে একমত হয়ে সরকারকে নির্মোহ থেকে বিচারকাজ পরিচালনার তাগিদ দেন। নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামাতের যে ঐক্য, তার নিন্দা করেন তিনি।
মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বে থাকা দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকে এ ধরনের কাজ অপ্রত্যাশিত বলে মন্তব্য করেন মেজবাহ কামাল।
যৌন নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীজোটের আহ্বায়ক শিবলী হাসান বলেন, পুলিশ বাহিনী যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করছে। পুলিশ প্রশাসনকে জবাবদিহিতার আওতায় না আনলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না। পুলিশের বিরুদ্ধে যেহেতু সরাসরি অভিযোগ, তাই পুলিশের তদন্ত কখনও সেখানে গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে পারে না। ফেনীর পুলিশ সুপার লিখিতভাবে অভিযুক্ত ওসির পক্ষ কীভাবে নেন? সে প্রশ্ন তুলেন তিনি।
শিবলী হাসান বলেন, পুলিশের এ তদন্ত কতোটুকু কার্যকরী হবে, সে ব্যাপারে অনিশ্চত। তাই নুসরাত হত্যাকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করছি।
তিনি বলেন, নারী নিপীড়ন ও নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনা যখন পুলিশের কাছে যায়, তখন তদন্ত কর্মকর্তা নিপীড়কের পক্ষ নেন। তাই বিচার পাওয়া দুরূহ হয়ে যায়। এই অবস্থা থেকে দ্রুত উত্তরণ না ঘটাতে পারলে, এই সমাজ বা দেশ রক্ষা করা সম্ভব নয়।
সবশেষে তিনি ঢাকা থেকে সোনাগাজীতে খুব শিগগির রোডমার্চ করার ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী নারী নির্যাতন ও ধর্ষণবিরোধী রোডমার্চ এবং র্যালি চলবে বলে জানান তিনি।
সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন সচেতন নাগরিক গোষ্ঠী, নিজেরা করি, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সফল নারী ব্যবসায়ী আইরিন রাব্বানী, সাংস্কৃতিক আন্দোলনকর্মী সানজিদা কাজী, টুটলি রহমান, কানিজ আলমাস, সোনিয়া পান্নি, জেরিন দেলোয়ার, নাশিদ কামাল, মুনমুন রহমান, তাম্মি প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
টিএ