শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
এসময় প্রধান অতিথি ছিলেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির।
এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে ‘এইচআর লিডারশিপ ফর ইমার্জিং ইকোনমি’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এলান বার্ড।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার নিহাদ কবির বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘ইমার্জিং ইকোনমি’ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখাতে উন্নতি করতে হলে আমাদের সম্পদগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের যে সম্পদগুলো রয়েছে সেগুলোকে কাজে লাগাতে হবে। আর আমাদের সবথেকে বড় সম্পদ মানবসম্পদ। বিভিন্ন বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে আমাদের দেশের কর্মীদের সুনাম রয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের বাংলাদেশি শাখাকে ‘বেস্ট পারফর্মিং কান্ট্রি’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ অঞ্চল প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ব্যবসায়িকভাবেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের তাগিদ দিয়ে দেশের যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থান তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন নিহাদ কবির। তিনি বলেন, আমরা এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্টের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। প্রায় ৬৫ শতাংশ যুব সমাজ আমাদের জন্য একটি সম্পদ। তবে আমরা যদি এ বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করতে না পারি, তাদের সামনে কোনো রূপরেখা রাখতে না পারি তাহলে এ সম্পদ দ্রুত অভিশাপে রূপান্তরিত হবে। কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও যে প্রথাগত পদ্ধতি অনুসরণ করে সেটিকে পরিবর্তন করতে হবে। শুধু সার্টিফিকেট বা একাডেমিক ফলাফল দেখা কর্মী নিয়োগ করা হলে আমরা মেধাবী এবং সম্ভাবনাময়ী তরুণদের পাবো না। কাজের বাস্তব ক্ষেত্রে সার্টিফিকেটের ফলাফলের সম্পর্ক খুবই কম।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আতিক ইসলাম বলেন, এইচআর পেশাজীবীদের এখন আগের থেকে আরও বেশি সৃজনশীল হতে হবে। গতানুগতিক এইচআর পদ্ধতি পরিবর্তিত হচ্ছে। যারা কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আর যারা চাকরি দেন; এ দুইয়ের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক থাকতে হবে। আর তাহলে এ খাতে কাজের সুযোগ আরও বাড়বে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএসএইচআরএম সভাপতি মাশেকুর রহমান খান বলেন, বিএসএইচআরএম দেশের মানবসম্পদ পেশাজীবীদের শীর্ষ সংগঠন। আমরা এমন আয়োজনের ব্যবস্থা করে থাকি যেন মানবসম্পদ উন্নয়ন ও এর আধুনিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিকনির্দেশক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আমরা একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করতে পারি। আমরা আশা রাখি, এ সম্মেলন অনেক সম্ভাবনাময়ী এইচআর পেশাজীবীদের সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে সফল হবে। এছাড়াও উন্নত বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিতে বাংলাদেশের এইচআর পেশাজীবীদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে মানবসম্পদ্দ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় এবং এম্পলয়মেন্ট আইন তৈরির করারও তাগিদ দেন মাশেকুর রহমান।
এবারের সম্মেলনের কনফারেন্স চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, এ সম্মেলনে দেশ ও বিদেশ থেকে প্রায় সাত শতাধিক এইচআর প্রফেশনালস বা মানবসম্পদ পেশাজীবী অংশ নেবেন। সম্মেলনে স্টল বসানো হয়েছে প্রায় ১৫টি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। সম্মেলনে জ্যেষ্ঠ এইচআর প্রফেশনালস হিসেবে মানব সম্পদ বিশেষজ্ঞ মনোয়ার আহমেদ এবং এস এ হককে (মরণোত্তর) আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়।
এছাড়াও দিনব্যাপী সম্মেলনে বেশ কয়েকটি সেশনে বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেবেন শীর্ষস্থানীয় দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে রয়েছেন শ্রীলঙ্কার আইপিএম প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. অজন্তা ধর্মসিড়ি, ভারতের আইআইএম এর সাবেক অধ্যাপক ড. টি ভি রাও, কনফারেন্স সেক্রেটারি কামরুজ্জামান প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৯
এসএইচএস/এসএইচ