ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নুসরাত হত্যা: পরিকল্পনা ও হত্যায় অংশ নেন হাফেজ কাদের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
নুসরাত হত্যা: পরিকল্পনা ও হত্যায় অংশ নেন হাফেজ কাদের ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন হাফেজ আবদুল কাদের

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হাফেজ আবদুল কাদের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। 

সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ফাজিলের শিক্ষার্থী হাফেজ আবদুল কাদের হেফজ বিভাগের প্রধান। তিনি এ মামলার প্রধান আসামি সিরাজ উদদৌলার অন্যতম সহযোগী।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ শুরু হয়।  

রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল এসপি মো. ইকবাল গণমাধ্যমকে হাফেজ আবদুল কাদেরের স্বীকারোক্তির তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, হাফেজ আবদুল কাদের আদালতের কাছে স্বীকার করেছেন তিনি ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। ঘটনার দিন তিনি হত্যাকারীদের নিরাপত্তায় মাদ্রাসার গেট পাহারায় ছিলেন এবং পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে অন্যতম। নিজের সক্রিয় অংশগ্রহণের কথা জানিয়েছেন। তার রুমেই হয়েছে পরিককল্পনা।  

এর আগে এ মামলার আসামি নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম ও আবদুর রহিম শরীফের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকালে ঢাকার হোসনি দালান এলাকা থেকে হাফেজ আবদুল কাদেরকে আটক করা হয়।  

গত ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাত জাহান রাফির গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারীরা। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানালে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয় তারা।  

আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাত মারা যান।  

শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি ছিলেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা। হত্যা মামলা হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ১৬ জন গ্রেফতার হয়েছেন। সিরাজ উদদৌলার ঘনিষ্ঠ নূর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম, আবদুর রহিম শরীফ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আদালতে। বাকি আসামিদেরও বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক হয়েছেন সহপাঠী মো. শামীম ও জান্নাতুল আফরোজ মনি।  

এদিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার জানান, তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনায় জড়িত পরোক্ষদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।  

শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার পর নুসরাতের ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেয়ায় সোমবার (১৫ এপ্রিল) সোনাগাজী থানার ওই সময়ের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করা হয়েছে। এ মামলাও তদন্তের জন্য পিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
এসএইচডি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।