ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রামুতে বৌদ্ধদের ঐতিহ্যবাহী স্বর্গপুরী উৎসব শুক্রবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
রামুতে বৌদ্ধদের ঐতিহ্যবাহী স্বর্গপুরী উৎসব শুক্রবার স্বর্গপুরী উৎসবে ভক্তরা।

কক্সবাজার: কক্সবাজারের রামুর উত্তর মিঠাছড়ি প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারে এবারও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী স্বর্গপুরী উৎসব অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল)।

বিহার প্রাঙ্গণে ৩৪তম উৎসব উপলক্ষে এ শুক্রবার ভোরে প্রভাতফেরি সহকারে বুদ্ধ পুজা, সকালে অষ্টপরিষ্কারসহ মহাসংঘদান, মহতি ধর্মসভা, প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র মহাথের’র প্রতিবিম্ব উদ্বোধন ও উৎসর্গ, ভিক্ষু সংঘের পিন্ডদান, অতিথি ভোজন, দুপুরে স্বর্গপুরী উদ্বোধন, বিকেলে স্বর্গপুরী মেলা, ধর্মালোচনা সভা, সন্ধ্যায় স্বর্গপুরী উৎসর্গ ও প্রয়াত ধর্মগুরু প্রজ্ঞামিত্র মহাথের’র নির্বান সুখ কামনা ও বাংলাদেশসহ বিশ্বশান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনাসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়াও রাতে অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

উৎসবের উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রজ্ঞামিত্র বনবিহারের অধ্যক্ষ সারমিত্র মহাথের বাংলানিউজকে জানান, আজ থেকে ৩৪ বছর আগে আমার শ্রদ্ধেয় গুরু ভান্তে প্রয়াত প্রজ্ঞামিত্র মহাথের এ উৎসবের সূচনা করেন। ২০০৭ সালে তিনি মারা যাওয়ার পরে আমরা এ উৎসবের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে আসছি।

তিনি আরও জানান, স্বর্গপুরী উৎসব এটি বর্তমানে সংস্কৃতির একটি সমৃদ্ধ অংশে পরিণত হয়েছে। এই উৎসবের মাধ্যমে মানুষকে মূলত জীবদ্দশায় মানুষ যে কর্ম করে সেই কর্ম অনুযায়ী বিভিন্ন কূলে তার জন্মান্তর ঘটতে পারে এমন ধারণা দেওয়া হয়।

সংসারে মানুষ জন্ম-মৃত্যুর গোলকধাধাঁয় পড়ে ভবচক্রে ঘুরতে ঘুরতে কখনো স্বর্গও লাভ করতে পারে। নিজ নিজ কর্ম ফলের কারণে মানুষ বিভিন্ন কূলে জন্ম গ্রহণ করছে, এমন বৌদ্ধিক ধারণা থেকে আজ থেকে ৩৪ বছর আগে এ উৎসবের সূচনা করা হয়। তখন থেকে বাংলা নববর্ষের প্রথম দিকে বৈশাখের প্রথম শুক্রবার এ স্বর্গপুরী উৎসবের আয়োজন হয়ে আসছে। যেটি কালক্রমে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মহামিলন মেলায় পরিণত হয়েছে।

উৎসব ও বৌদ্ধ মহাসম্মেলন উদযাপন পরিষদের কর্মকর্তা, কারুশিল্পী প্রবীন বড়ুয়া জানান, বাঁশ-কাঠ ও কাগজের নানা কারুকার্য খচিত দোতলা দৃষ্টিনন্দন এ স্বর্গপুরী তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে একমাস আগে। স্বর্গপুরী তৈরিসহ ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র কিছু রঙের কাজ বাকি, তাও বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর রামু-কক্সবাজার ছাড়াও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা, আলীকদম ও সূদুর রাঙামাটি থেকেও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ উৎসবে যোগ দেন।

সব ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে এ উৎসব সার্বজনীন মিলনমেলা পরিণত হয়। আমরা আশা করছি, এবার লোক সমাগম আরো বেশি হবে। তবে গরমের তীব্রতা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির আসন অলংকৃত করবেন বাংলাদেশি বৌদ্ধদের উপ-সংঘরাজ ও রামু কেন্দ্রীয় সীমা মহাবিহারের অধ্যক্ষ পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের।

অনুষ্ঠানে জেলা উপজেলার শীর্ষ পর্যায়ের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, ধর্মীয় ও সামাজিক নেতারা ছাড়াও শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু-শ্রামন উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৯
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।