ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নুসরাত হত্যার আসামি আবদুল কাদের গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯
নুসরাত হত্যার আসামি আবদুল কাদের গ্রেফতার

ফেনী: নুসরাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত একমাত্র পলাতক আসামি হাফেজ আবদুল কাদের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) একটি টিমের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকার হোসনী দালান এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছে একটি দায়িত্বশীল সূত্র।

যদিও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখনো এ ব্যাপারে তথ্য পাইনি।

সারাদেশে এ হত্যাকাণ্ডের আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পিবিআইয়ের অনেকগুলো টিম কাজ করছে।

আবদুল কাদের সোনাগাজী আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব সফরপুর গ্রামের মনছুর খান পাঠান বাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে। তার বাবা সাহেবের হাটের চা দোকানি। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে হাফেজ আবদুল কাদের পঞ্চম। তিনি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক এবং ফাজিল দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার অনুগত হিসেবে মাদ্রাসার হোস্টেলে থাকতেন আবদুল কাদের।  

গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।

পরে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায় নুসরাত।

শ্লীলতাহানির মামলায় আগে থেকেই কারাবন্দি সিরাজ উদ-দৌলা। হত্যা মামলা হওয়ার পর কাদেরকে নিয়ে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছে ১৪ জন। এদের মধ্যে সিরাজ উদ-দৌলার ‘ঘনিষ্ঠ’ নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরা দু’জন নুসরাত হত্যা মামলার দুই নম্বর এবং তিন নম্বর আসামি।  

বাকি আসামিদের মধ্যে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। এরা হলেন- সিরাজ উদদৌলা (৭ দিন), আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর কাউন্সিলর মাকসুদ আলম (৫ দিন), জাবেদ হোসেন (৭ দিন), নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, আবছার উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম, উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেন (৫ দিন রিমান্ড)।

এছাড়া, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় নুসরাতের সহপাঠী মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ ও শরীফকে। এদের মধ্যে কামরুন নাহারকে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকেও পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে বুধবার।

** নুসরাত হত্যা: কামরুন নাহার মনি ৫ দিনের রিমান্ডে

নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে আবদুল কাদেরের জড়িত থাকার স্বীকার করেন। তাদের ভাষ্যে, ঘটনার দিন হাফেজ আবদুল কাদের মাদ্রাসার গেইট পাহারার দায়িত্বে ছিলেন এবং ঘটনার আগের দিন ৫ এপ্রিল খুনের পরিকল্পনার বৈঠকে তিনি ছিলেন। কাদেরের হোস্টেলেই বৈঠক হওয়ার কথা জানান দু’জন।

সূত্র জানায়, আগুনে নুসরাতকে ঝলসে দেওয়ার পর ৭ এপ্রিল মালামাল নিয়ে হোস্টেল ত্যাগ করেন আবদুল কাদের। পরদিন ৮ এপ্রিল তার গ্রামের বাড়ি পূর্ব সফরপুরে মনছুর খান পাঠান বাড়িতে ছিলেন। মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের খবর জানতে পেরে বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান আবদুল কাদের। ১২ এপ্রিল ঘটনার রহস্য উদঘাটনের পর কাদেরের নাম আসায় ওই দিন বিকেলেই বসতঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান তার মা-বাবাসহ স্বজনরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৭, ২০১৯ 
এসএইচডি/এইচএ/

** নুসরাত হত্যাকাণ্ড: অধরা আবদুল কাদের

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।