ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

আমি কি বিনা চিকিৎসায় মারা যাবো?

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
আমি কি বিনা চিকিৎসায় মারা যাবো? সাদিয়া সুলতানা

খুলনা: দু’টি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে মেধাবী স্কুলছাত্রী সাদিয়া সুলতানার। এখন প্রতি সপ্তাহে তাকে ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। এই চিকিৎসা প্রচুর ব্যয় সাপেক্ষ। দ্রুত কিডনি প্রতিস্থাপন করতে না পারলে তাকে বাঁচানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

খুলনার সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া। সে ২০১৬ সালে পিএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছে।

কিন্তু এখন আর স্কুলে যেতে পারে না সাদিয়া। দিন দিন সে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

সাদিয়ার ক্লাস টিচার সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাহিদা পারভীন বাংলানিউজকে বলেন, সাদিয়ার দুইটি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় স্কুলে আসতে পারে না। এ বছর দুই একদিন স্কুলে এসেছে। আমরা স্কুলের একটি ফান্ড গঠন করে সাদিয়ার চিকিৎসায় সাহায্য করার চেষ্টা করছি।

সাদিয়া বলে, এতো দিন বাবা-মা তাদের সব টাকা পয়সা দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন আর পারছে না। যে কারণে আমার চিকিৎসা বন্ধ। দেশে কোটি কোটি মানুষ থাকতে টাকার অভাবে আমি কি বিনা চিকিৎসায় মারা যাবো? এই বলে কান্নায় ভেঙে পরে সাদিয়া।

সাদিয়ার বাবা সামান্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও মা গৃহিণী। সংসারের সর্বস্ব খুইয়ে একমাত্র মেয়েকে সুস্থ করতে ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। অর্থাভাবে মেয়ের চিকিৎসা না করেই দেশে ফিরে আসেন। এখন ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সাদিয়া। সবকিছু হারিয়ে অসহায় বাবা-মায়ের চোখের সামনে মেয়ের মৃত্যু দেখা ছাড়া আর যেন কিছুই করার নেই তাদের।

সাদিয়ার বাবা মেজবাহ উদ্দিন শিকারী। খুলনা সদর থানার পূর্ব বানিয়া খামার এলাকার লোহার গেট মাদ্রাসার দক্ষিণ পাশ দিয়ে কাস্টমস গলির কেয়া ভবনের বাসিন্দা।

তিনি বলেন, আমি ১ নং কাস্টমস ঘাটে সামান্য একটি ব্যবসা করি। এতোদিন আমার সাধ্যমত সাদিয়াকে চিকিৎসা করিয়েছি। তার দুইটি কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে এবং বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেছেন আমার মেয়ের একটি কিডনি জরুরি ভিত্তিতে প্রতিস্থাপন করতে হবে। মেয়ের চিকিৎসা করানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় করে আমি ও আমার পরিবার নিঃস্ব প্রায়। এই মুহূর্তে আমার পক্ষে মেয়ের কিডনি প্রতিস্থাপন করা একেবারেই অসম্ভব। তাই আমি সমাজের বিত্তবানদের কাছে মেয়ের জন্য সহযোগিতা প্রার্থনা করছি। যাতে আমি আমার মেয়ের কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে পারি।

সাদিয়ার বাবা বলেন, ৮-৯ মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরে সাদিয়া। পরে খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের মেডিসিন ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ আর্শাদ-উল-আজীমকে দেখালে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর তিনি জানান সাদিয়ার দুইটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)  হাসপাতালে দেখানো হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের জওহরলাল নেহরু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে জানায় কিডনি জরুরি ভিত্তিতে প্রতিস্থাপন করতে ভারতীয় রুপির ১৮ লাখ রুপির প্রয়োজন। বাংলাদেশে যা প্রায় ২০ লাখ টাকা। এত টাকা পাবো কোথায়।  

তিনি বলেন, সাদিয়াকে আমি ও ওর মা যে কেউ কিডনি দিতে পারবো। আমাদের সঙ্গে ওর মিল আছে। এখন শুধু টাকার প্রয়োজন।

মেয়েকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন সাদিয়ার বাবা মেজবাহ।

আর্থিক সাহায্যের টাকা পাঠানোর ঠিকানা: একাউন্ট নাম: মেজবাহ উদ্দিন শিকারী, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর: ৩৪১৯৭৩২৪ সোনালী ব্যাংক, কর্পোরেট শাখা, খুলনা। যোগাযোগ করার জন্য: মোবাইল নং: ০১৭২৬-৮৮৫৫১৭ (বাবা) । বিকাশ নং: ০১৭৩২-৬১৮৮০১ (মা নাসরিন নাহার)।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩০ ঘণ্টা,  এপ্রিল ১৬,  ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad