ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পলাতক মানবতাবিরোধী অপরাধী নূর উদ্দিনের মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
পলাতক মানবতাবিরোধী অপরাধী নূর উদ্দিনের মৃত্যু

নেত্রকোণা: নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার পলাতক মানবতাবিরোধী অপরাধী নূর উদ্দিনের (৭০) মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ২টার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। এর আগে থেকেই তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগে আক্রান্ত ছিলেন।  

পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  
তিনি জানান, ঢাকার গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকায় পলাতক ওই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যু হয়।

পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের পূর্ব মৌদাম গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর থেকে তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।

সোমবার দিনগত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নূর উদ্দিনের মরদেহ মৌদাম গ্রামের বাড়িতে পৌঁছেছে বলেও নিশ্চিত করেন ওসি।

এর আগে চলতি বছরের ২৮ মার্চ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।  

ওই রায়ে নূর উদ্দিন ছাড়াও পূর্বধলার পলাতক রাজাকার শেখ মো. আব্দুল মজিদ মাওলানা, মো. আব্দুল খালেক তালুকদার, মো. কবির খান, আব্দুস সালাম বেগের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নূর উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুসলিম লীগের কর্মী হয়ে রাজাকার বাহিনীতে যোগ দেন। এছাড়াও সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী বিএনপির রাজনীতিতেও যুক্ত ছিলেন নূর উদ্দিন।

একাত্তরে তিনি পূর্বধলার বারহা গ্রাম থেকে মহির উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে তাকে আটকে নির্যাতন চালানোর পর নির্মমভাবে হত্যা করেন।

প্রসঙ্গত, নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেককে হত্যার ঘটনায় বড়ভাই মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির ২০১৩ সালে একটি মামলা করেন।

যুদ্ধকালীন ২১ আগস্ট বাড়হা গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা খালেককে গুলি করে হত্যার পর তার মরদেহ কংস নদে ভাসিয়ে দেয়া হয়।

মামলাটি আমলে নিয়ে ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হলে প্রসিকিউশনের তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাহান কবির ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ, পর্যন্ত অভিযোগ তদন্ত করেন। পরের বছর ১৬ মার্চ প্রসিকিউশনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন তিনি। যাচাই বাছাই শেষে ২২ মে, প্রসিকিউশন ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করে।

অভিযোগ আনা হয়, অপহরণের পর আটজনকে হত্যা। একজনকে ধর্ষণ ও তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ মালামাল লুটপাট। এদিকে তদন্ত চলাকালেই প্রসিকিউশনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল শেখ মো. আব্দুল মজিদ মাওলানা, মো. আব্দুল খালেক তালুকদার, মো. কবির খান, আব্দুস সালাম বেগ, আহম্মদ আলী ও আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

এর মধ্যে ২০১৫ সালের আগস্টে আহম্মদ আলী ও আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কারাগারে মারা যান গ্রেফতারকৃতরা। অন্যদিকে বাকি পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু হয় মামলার বিচারকার্য।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।