সোমবার (১৫ এপ্রিল) ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহম্মেদ এ আদেশ দেন।
ফেনীর কোর্ট পরিদর্শক গোলাম জিলানী জানান, সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়েরে করা মামলারচার নম্বর আসামি মুকসুদ আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধ্যে ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড দিয়েছে আদালত।
গত ৯ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সরাফ উদ্দিন আহম্মেদের আদালত নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন ও শাহিদুল ইসলামের পাঁচদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরদিন ১০ এপ্রিল অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদদৌলাকে সাতদিন, আবছার উদ্দিন ও আরিফুল ইসলামকে পাঁচদিন করে রিমান্ড দেন একই আদালতের বিচারক। ১১ এপ্রিল উম্মে সুলতানা পপি ও যোবায়ের হোসেনকে পাঁচদিন করে রিমান্ড দেন একই আদালতের বিচারক সরাফ উদ্দিন আহম্মেদ। ১৩ এপ্রিল মামলার আরেক আসামি জাবেদ হোসেনকে সাত দিনের রিমান্ড দিয়েছেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইন।
এদিকে রোববার ১৪ এপ্রিল রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামীম। জবানবন্দিতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নির্দেশে তারা নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন।
এদিকে টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকেলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যায় নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসার এক ছাত্রী সহপাঠী নিশাতকে ছাদের উপর কেউ মারধর করেছে এমন সংবাদ দিলে নুসরাত ওই বিল্ডিংয়ের তিন তলায় যায়। সেখানে মুখোশধারী চার থেকে পাঁচজন তাকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয় তারা। সে অস্বীকৃতি জানালে তারা গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকসুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন নুসতারের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।
গত ২৭ এপ্রিল ওই ছাত্রীকে নিজ কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। পরে এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০১৯
এসএইচডি/আরআইএস/