ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

নুসরাতের মৃত্যুতে বারবার অজ্ঞান হচ্ছেন দুই ভাই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
নুসরাতের মৃত্যুতে বারবার অজ্ঞান হচ্ছেন দুই ভাই বাবা ও এক স্বজনের বুকে মাথা রেখে কাঁদছেন মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের দুই ভাই। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: মেয়ের মৃত্যুর পর থেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বসে কাঁদছেন ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির বাবা মাওলানা এ কে এম মুসা।

বাবার সঙ্গে চেয়ার বসে কাঁদছেন নুসরাতে দুই ভাই নোমান ও রায়হান। কাঁদতে কাঁদতে জ্ঞান হারাচ্ছেন প্রায়ই।

স্বজনরা তাদের মাথায় পানি ও বাতাস দিয়ে কিছুটা সুস্থ করলেও আবারো জোরে জোরে কেঁদে ওঠছেন তারা। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চারপাশ।

নুসরাতের মৃত্যু পরে বুধবার ( ১০ এপ্রিল) রাতে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আইসিইউর বাইরে তাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তাকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন নুসরাতের বাবা ও দুই ভাই।  

এসময় সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি তাও আপনার মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। ’

কাঁদতে কাঁদতে নুসরাতের বাবা বলেন, ‘আপনারা অনেক কষ্ট করেছেন, আমি নিজে দেখেছি। আপনাদের কোনো ত্রুটি ছিল না। আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন। যেন আল্লাহ তাকে বেহেশত নসিব করেন।

বুধবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নুসরাত। তার মৃত্যুর বিষয়টি বাংলানিউজকে জানিয়েছেন বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। সামন্ত লাল সেনকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন নুসরাতের বাবা।  ছবি: বাংলানিউজগত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। এর আগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য নুসরাতকে চাপ দেয় তারা।  

এই ছাত্রীর পরিবারের ভাষ্যে, ২৭ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তার কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এর জেরে মামলা করায় নুসরাতকে আগুনে পোড়ানো হয়। ওই মামলার পর সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।  

এদিকে আগুনে ঝলসে যাওয়া নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার চিকিৎসায় গঠিত হয় নয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু সবার প্রার্থনা-চেষ্টাকে বিফল করে চলেই গেলো ‘প্রতিবাদী’ নুসরাত।

বাংলাদেশ সময়: ০১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৯
এজেডএস/ইইউডি/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।