ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নতুন প্রজন্ম বিশ্বকে টেক্কা দেবে: প্রধানমন্ত্রী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
নতুন প্রজন্ম বিশ্বকে টেক্কা দেবে: প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: এখন পরিবর্তনশীল যুগ। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত। আমরাও এগিয়ে যাচ্ছি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের আরও এগিয়ে চলতে হবে। আমি জানি বাংলাদেশের মানুষ অনেক মেধাবী। তারা চাইলে সব পারে। আর আমাদের বর্তমান প্রজন্ম উচ্চশিক্ষা অর্জন করে বিশ্বকে টেক্কা দিয়ে তথ্যপ্রযুক্তির সমৃদ্ধির দেশ গরবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, দেশের উন্নয়নে, দেশের শান্তিতে গবেষণার বিকল্প নেই। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে গবেষণা করে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে আমাদের তরুণদের।

সবকিছুতেই সফলতা পেতে হলে অতীত জানার প্রয়োজন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন, তা সবারই জানা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এমন গৌরব অতীত আমাদের চলার পথের অনুপ্রেরণা। এসব জানতে হলে গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বুধবার (১০ এপ্রিল) বেলা পৌনে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণায় অবদানের স্বীকৃতিতে অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি শাসনে গবেষণার কিছুই ছিল না। কোনো উৎসাহ দেওয়া হতো না। আমি ক্ষমতায় এসে সে সুযোগ করে দিই। আমি প্রথমেই গবেষণার জন্য একটা বরাদ্দ দিলাম। ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছিলাম গবেষণার জন্য। এরপর ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখি গবেষণা এবং প্রযুক্তির জন্য। গবেষণায় গুরুত্ব দিয়েছি বলেই উৎকর্ষতা এসেছে দেশে। বিজ্ঞান ও তথপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হচ্ছে আমাদের সোনার বাংলা। তাই গবেষণাটা উন্নয়নের মুখ্য বিষয়।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাতে ব্যবহার হয়, সেক্ষেত্রে আমি গুরুত্ব দেয়েছি। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ। সকলের হাতে স্মার্টফোন। মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছি। মহাকাশ জয় করেছি। আরও অনেক ক্ষেত্রে ডিজিটালে এগিয়ে নিচ্ছি দেশে। এছাড়া আমাদের মহাকাশেও গবেষণা প্রয়োজন। হয়তো আমরা মহাকাশেও যেতে পারবো। সবকিছু থেকে বের হবার একমাত্র পথই গবেষণা। এ লক্ষ্যেই আমরা এই বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ চালু করেছি।

এসময় প্রধানমন্ত্রী যারা গবেষণা করে অবদান রেখেছেন, যারা অনুদান পাচ্ছেন, তাদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এখানে যারা গবেষক আছেন, আরও ভালো করে গবেষণা করুন। যেকোনো ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আরও বেশি উৎকর্ষ সাধণ করতে পারে। কোথায়  কোথায় আমাদের আরও বেশি বিনিয়োগ করা দরকার, গবেষণা করে বের করতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ করুন আপনারা। এছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়নে গবেষক বিজ্ঞানীদের অনেক অবদান আছে। আপনারা আরও মনোযোগের সঙ্গে কাজ করবেন।

পরে শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা যখন একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সবকিছু মোকাবিলা করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেদিন আমার পুরো পরিবারকে আমি হারাই। এসব আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানা দরকার। বোঝা দরকার জাতির পিতা দেশের জন্য কী কী করে গেছেন। আমাদের যে স্বাধীনতার চেতনা-গৌরব, সে বিষয়েও গবেষণার বিকল্প নেই।

তিনি আরও বলেন, ২৯ বছরের ক্ষমতায় তারা দেশেরে কোনো উন্নয়নের চিহ্ন রাখতে পারেনি। পারবেই বা কী করে। তারা তো স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। বরং বিরোধিতা করেছিল। তারা দেশের উন্নয়ন করবে কী করে। ক্ষমতায় এলেই নিজের পকেট ভরতে ব্যস্ত হয়ে যায় বিএনপি। আর আজ দেশ দ্রুত ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল। আজকে আমরা বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি। বিশ্বাস করি আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। এই পথ ধরেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে। অনুদানের চেক হস্তান্তর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: সংগৃহীত‘এই পথ চলার মধ্যে দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবো। আমরা এখানে থেমে থাকিনি। প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। সেইসঙ্গে আমরা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। ২০১০ সালে এসে ২০২১, পরবর্তীতে ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা আমরা প্রণয়ন করেছি। তারপরও আমরা ২১০০ সালের বাংলাদেশ কেমন হবে, সেটা মাথায় রেখে ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ প্রণয়ণ করেছি। জনগণ যেনো উন্নত জীবন পায়, সুন্দর জীবন পায়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা এই দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা তো ততোদিন বাঁচবো না, কিন্তু শতবর্ষ পরে যারা আসবে, তাদের কথা মাথায় রেখে আমাদের এই পরিকল্পনা। ’

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ভাষার অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন পাকিস্তানি শাসকরা। ১৯৪৮ থেকে জাতির পিতা আন্দোলন করে গেছেন বাঙালির ভাষার জন্য। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানিদের অত্যাচারের জবাব দিয়ে গেছেন। বাঙালির মুক্তির সনদ তিনি রচনা করেছিলেন ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দিয়ে।

আজ ১০ এপ্রিল। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন হয়। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণার পর ১০ এপ্রিল এ সরকার গঠিত হয়। পরে ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলা গ্রামে এই মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে বৈদ্যনাথতলা গ্রামের নামকরণ হয় মুজিবনগর, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব।

পরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রাপ্তদের হাতে চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০১৯
এমইউএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।