ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

৪০ বছর ধরে বিনা বেতনে ছবি আঁকা শেখান আব্দুল আজিজ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০১৯
৪০ বছর ধরে বিনা বেতনে ছবি আঁকা শেখান আব্দুল আজিজ

মাগুরা: মাগুরার মুক্তিযোদ্ধা চিত্রশিল্পী আব্দুল আজিজ। নিজ উদ্যোগে আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করে প্রায় ৪০ বছর ধরে তিনি এলাকার শিশু-কিশোরদের বিনা বেতনে ছবি আঁকা শিখিয়ে যাচ্ছেন। 

শুধু তাই নয় অদম্য মনোবলের অধিকারী ৮২ বছর বয়সী এ মানুষটি মাগুরার প্রত্যন্ত এলকার বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে শিশু-কিশোরদের ছবি আঁকা শেখানোর পাশাপাশি তাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশপ্রেম ও নৈতিকতাবোধ সৃষ্টিতে কাজ করে চলেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা চিত্রশিল্পী আব্দুল আজিজের বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার রাউতড়া গ্রামে।

তিনি নিজ জমির ওপর ব্যক্তিগত উদ্যোগে একটি আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এ স্কুলটির নামকরণ করেছেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী মুস্তফা আজিজের নামে। যেখানে সপ্তাহে শুক্র-শনিবার দুইদিন সকালে তিনি বিনা বেতনে এলাকার শিশু-কিশোরদের ছবি আঁকা শেখান। শুধু ছবি আঁকা নয়, বাংলা নববর্ষ বরণ, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, আন্তর্জাতিক  মাতৃভাষা দিবস আনুষ্ঠানিকভাবে পালনের মাধ্যমে বাঙ্গালি সংস্কৃতি সম্পর্কে এখানকার ছেলে-মেয়েদের সচেতন করে তোলার কাজটিও করে চলেছেন। এছাড়া সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতে তিনি ছুটে যান জেলার বিভিন্ন এলাকার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে।  

এসব বিদ্যালয়গুলোতেও তিনি স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ছবি আঁকাসহ একইভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও নীতি নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে চলেছেন ক্লান্তিহীনভাবে। তার এই স্কুলে ছবি আঁকা শিখে শিক্ষার্থীরা দক্ষ চিত্রশিল্পী হিসেবে গড়ে ওঠার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কৃত হচ্ছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, স্কুল পর্যায়ের চিত্রকলা বাধ্যতামূলক হলেও জেলার অধিকাংশ বিদ্যালয়ে এ বিষয়ে কোনো শিক্ষক নেই। তবে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ছবি আঁকা শিখিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।  

এলাকাবাসী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পংকজ কুন্ডু বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ নিজ অর্থায়নে আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করে বিনা বেতনে প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার ছেলে-মেয়েদের ছবি আঁকা শিখিয়ে জাতি গঠনে অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন। একইভাবে জেলার অন্য বিদ্যালয়গুলোতে তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে ছবি আঁকাসহ শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস ও নীতি নৈতিকতার শিক্ষা দিয়ে আসছেন। তার এই অবদানের জন্য সরকারিভাবে তাকে সম্মানিত করা উচিত।

এ বিষয়ে আব্দুল আজিজ বাংলানিউজকে বলেন, আমার মৃত্যুর পরও যাতে স্কুলটি চালু থাকে এজন্য প্রতিষ্ঠানের জন্য এক একর জমি দান করে যাবো।

বাংলাদেশ সময়: ১০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।