ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে কাউকে ছাড় নয়: গণপূর্ত মন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৯
এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডে কাউকে ছাড় নয়: গণপূর্ত মন্ত্রী বনানীর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম/ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: রাজধানীর বনানীর এফ আর টাওয়ারে গাফিলতির কারণে অগ্নিদুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড ঘটেছে মন্তব্য করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম বলেছেন, যত প্রভাবশালীই হোক না কেন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এবং আমরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি অতীতের মতো করে নয়, কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) রাজধানীর বনানীর বহুতল ভবন এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব হীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান, স্থাপত্য অধিদফতরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসীর ও গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইয়াকুব আলী পাটওয়ারীসহ সংশ্লিষ্ট দফতর/সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা জানার পর থেকে সরাসরি বিষয়টি তদারকী করছেন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, দফতরসহ সবার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাৎক্ষণিকভাবে যেখানে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার, সে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন’।

তিনি বলেন, এফ আর টাওয়ার ভবনটিকে ১৮তলা ইমারত নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ১৯৯৬ সালে। ২০০৫ সালে এসে রাজউকে একটা কপি দাখিল করে বলা হয়, এটা ২৩তলা হয়েছে। তদন্তে দেখা যায়, যে কপি ভবন কর্তৃপক্ষ দাখিল করেছে তার সমর্থনে রাজউকের রেকর্ডে কোথাও কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। এতে তদন্তে রিপোর্টে ধরে নেওয়া হয় ২৩তলার যে নকশা ভবন কর্তৃপক্ষ দাখিল করেছে তা সঠিক নয় এবং মূল অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে। সে সময়ে রাজউক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা ছিলেন, তাদের আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি’।  

মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ০৬ (ছয়) সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছি, তারা স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেবেন। রাজউকের পক্ষ থেকেও একইরকম একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে’।  

তদন্ত কমিটির কার্যপরিধির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তদন্ত কমিটি এ ভবনের প্ল্যান অনুমোদনের প্রক্রিয়ার ভেতরে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে কিনা, অনুমোদিত প্ল্যানের বাইরে বিল্ডিং নির্মাণ হয়েছে কিনা, হয়ে থাকলে এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত, ডেভেলপার, ভবন মালিক এমনকি আমাদের সংস্থার কেউ জড়িত থাকলে তার সম্পর্কে প্রতিবেদন দেবেন। প্রতিবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেই হোন না কেন, যতো শক্তিশালীই হোন না কেন, এরকম মর্মান্তিক ঘটনা যারা টাকার লোভে ঘটায়, সেই নরপিশাচদের আইনের আওতায় এনে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, দ্রুতগতিতে আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  

তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করবো। যারা অনুমোদনের বাইরে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের লাইসেন্স বাতিলসহ ফৌজদারী মামলা এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনে তাদের নির্মিত ভবনের বেআইনি অংশ ভেঙে ফেলা হবে।

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন ‘ঢাকা শহরে একেবারে অনুমোদনহীন বা অনুমোদনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে অনেক ইমারত নির্মাণ করা হয়েছে, মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ বিষয়গুলো বিশদভাবে খতিয়ে দেখছি এবং আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। অতীতের ঘটনাগুলোও খতিয়ে দেখবো, অতীতের দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, কারা ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি, তাদেরও ব্যবস্থা গ্রহণের আওতায় আনা হবে’।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৯
জিসিজি/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।