ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৯
খুলনায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের কুচকাওয়াজ, ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন ও তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে গল্লামারী শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়। প্রত্যুষে খুলনা কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে দিবসের শুভ সূচনা করা হয়।

সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ভবনগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের প্রধান প্রধান সড়কে জাতীয় পতাকা ও রং বে-রঙের পতাকা দিয়ে সজ্জিত করা হয়।

সকাল ৮টায় খুলনা জিলা স্কুল মাঠে সমগ্র দেশের সঙ্গে একযোগে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া।

এসময় মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। পরে সেখানে বিভিন্ন বাহিনী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সমাবেশ, কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে ও শরীরচর্চা প্রদর্শন করা হয়।

সকাল ১১টা থেকে নগরীর সব সিনেমা হল, দৌলতপুর শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ও দুর্নীতিবিরোধী তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সকাল ১১টায় খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।

বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমান, পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) সরদার রকিবুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ।

এতে সভাপতিত্ব করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন। স্বাগত জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) মো. ইকবাল হোসেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যর মধ্যে বক্তৃতা করেন, মুক্তিযোদ্ধা সরদার মাহবুবার রহমান এবং নূর ইসলাম বন্দ। সভা পরিচালনা করেন মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আলমগীর কবীর। এসময় সংবর্ধিত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতাল, জেলখানা, এতিমখানা ও ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশুকেন্দ্রগুলোতে দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়। জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বাদ যোহর কালেক্টর মসজিদসহ নগরীর মসজিদে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।

দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত স্থানীয় নৌবাহিনীর জাহাজ খুলনাস্থ বিআইডব্লিটিএ রকেটঘাটে জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়।
বিকেলে সাড়ে ৩টায় পাইওনিয়ার স্কুলে নারীদের ক্রীড়া অনুষ্ঠান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ এবং বিকেল ৪টায় খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে কেসিসি একাদশ বনাম জেলা প্রশাসন একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

সন্ধ্যা ৬টায় শহীদ হাদিস পার্কে অনুষ্ঠিত হয় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের তাৎপর্য এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এদিকে, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নগরীর নির্দিষ্ট স্থানে বাদ্য সংগীত পরিবেশন করা হয়।

সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত উমেশচন্দ্র পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে মুক্তিযুদ্ধের দুর্লভ ছবি ও পুস্তক প্রদর্শনী এবং কবিতা পাঠের আসর আয়োজন করা হয়। খুলনা বিসিক প্রাঙ্গণে বিকেল ৩টায় তিন দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।

অপরদিকে, যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন হয়। এ উপলক্ষে সকাল ৬টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি সূচনা করেন উপাচার্য।

সকাল সাড়ে ৬টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়টির মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য অদম্য বাংলায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রথম শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন ডিসিপ্লিন, আবাসিক হল, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, খুবি অফিসার্স কল্যাণ পরিষদ, ছাত্রদের বিভিন্ন সংগঠন এবং কর্মচারীরা।

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) যথাযোগ্য মর্যাদায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন হয়। ২৬ মার্চ মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, ভাইস-চ্যান্সেলরের বাসভবন এবং আবাসিক হলগুলোতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসস্থ মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘দুর্বার বাংলা’র পাদদেশে গণসংঙ্গীত পরিবেশন করেন। সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কাজী সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পৃথক পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করে। উপজেলাগুলোতেও অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৯
এমআরএম/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।