ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নৌকার বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ এমপি নারায়ণের বিরুদ্ধে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৯
নৌকার বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ এমপি নারায়ণের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ার এমন অভিযোগ করেন

খুলনা: খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দের বিরুদ্ধে দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে আসন্ন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচনে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর অভিযোগ, দলীয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে তার ছেলে ও সমর্থকদের দিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ। সেই সঙ্গে দলীয় প্রার্থীর বিজয়কে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাধাগ্রস্ত করছেন।

এমপির সন্ত্রাসীদের কারণে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে আতঙ্কিত রয়েছেন সবাই।

সোমবার (২৫ মার্চ) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ার এসব অভিযোগ করেন।  

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, খুলনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ১৮ মার্চ সকালের ফ্লাইটে যশোরে এসে যশোর আইটি পার্কের অডিটরিয়ামে বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। এবং তাদের বলেন, আমি মন্ত্রী থাকা অবস্থায় কিছু করতে পারিনি। আমি শিগগিরই আবার মন্ত্রী হচ্ছি। এবার তোমাদের অনেক সুযোগ সুবিধা দেবো। তোমরা ডুমুরিয়ায় নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করো। তখন সেখানে উপস্থিত বেশ কয়েকজন বলেন, তিনি তো আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী। এর পরিপ্রেক্ষিতে এমপি বলেন, এ নৌকা সে নৌকা নয়।
 
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তফা সরোয়ার আরও বলেন, রোববার প্রিজাইডিং অফিসারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তারা সবাই নারায়ণ চন্দ্র চন্দের অনুসারী। সংসদ নির্বাচনে যারা ছিল তাদেরই এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ উপজেলা নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার বানিয়েছেন।

মোস্তফা সারোয়ার বলেন, নারায়ণ চন্দের ছেলে বিশ্বজিৎ চন্দ্র রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর। তিনি প্রকাশ্যে আমার বিরুদ্ধে অশ্লীল মন্তব্য করছেন। তিনি বলেছেন ঘোড়ার (প্রতীক) চাঠিতে নাকি নৌকা তলিয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হয়ে তার বক্তব্য এমন অশ্লীল হয় কিভাবে। শুধু তাই নয় ডুমুরিয়া উপজেলায় যারা নামধারী সন্ত্রাসী ছিল তারাই বিভিন্ন জায়গায় তার সঙ্গ নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকাশ্য অস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঘোরাফেরা করছে। আমার সব নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। তারা নৌকার কর্মীর উপর বিভিন্ন সময় আঘাত করছে। বিভিন্ন বাড়ি গিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। প্রত্যেককে বলে আসছে কেউ যেন নৌকার এজেন্ট না হয়। যে কারণে আমি ও আমার নেতা-কর্মীরা প্রাণের শঙ্কায় রয়েছি।

নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন জানানোর কথা বলে মোস্তফা সরোয়ার বলেন, ডুমুরিয়ায় যে প্রিজাইডিং অফিসারের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে তা যাচাই বাছাই করা হোক। এই তালিকা এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ইচ্ছা স্বাধীন মতো করা হয়েছে। এই তালিকা বাতিল করে নিরপেক্ষ তালিকা করা হোক। নিষ্ঠাবান সত্যনিষ্ঠ দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারে তাদেরকে নতুন করে প্রিজাইডিং অফিসার করা হোক। তা না হলে যে কোন পরিস্থিতির জন্য দায়ী থাকবে নির্বাচন কমিশন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুদাঘরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল খোকন,  জেলা পরিষদের সদস্য ও ডুমুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার আবু সালেহ, ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বুলু, আটলিয়া ইউনিয়ন চেয়্যারম্যান ও  ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট প্রতাপ রায়, যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম রাজু ও জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা সারোয়ারের অভিযোগ প্রসঙ্গে এমপি নারায়ণ চন্দ্র চন্দ সোমবার বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, তার করা অভিযোগগুলো সত্য নয়। আমি কোথাও নৌকার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেইনি। জনগণ যদি তাকে গ্রহণ না করে তবে আমার কিছুই করার নেই।

আগামী ৩১ শে মার্চ চতুর্থ দফা উপজেলা নির্বাচনে খুলনার উপজেলাগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশসময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৯
এমআরএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad