ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

দখলের কবলে জিকে সেচ প্রকল্প, ফসল বিপর্যয়ের আশঙ্কা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
দখলের কবলে জিকে সেচ প্রকল্প, ফসল বিপর্যয়ের আশঙ্কা দখলের কবলে জিকে সেচ প্রকল্প। ছবি: বাংলানিউজ

চুয়াডাঙ্গা: কুমার নদের প্রধান শাখা গঙ্গা-কপোতাক্ষ (জিকে) সেচ প্রকল্প। কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ এবং মাগুরা জেলার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো মৌসুমে সেচ কাজে ব্যবহৃত হয় প্রকল্পটি। 

চারটি জেলার ১৩টি উপজেলার প্রান্তিক চাষিরা এ প্রকল্পের ওপর নির্ভর করে কৃষিকাজ করে। খরা মৌসুমে মাটির উর্বরতা বাড়াতে সেচ কাজে এ খালের ভূমিকা দীর্ঘদিন ধরেই।

এই খালের মাধ্যমে আশানুরূপ ফসল উৎপাদন করে হাসি ফোটে লাখো কৃষকের। খোদ সেই খালের ওপর কুনজর পড়েছে অসাধু দখলদারদের।  

সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েক বছর ধরে আলমডাঙ্গা অংশে খালটির দুই পাড় অবাধে দখল হচ্ছে। উপজেলা শহরের লালব্রিজ এলাকা থেকে আনন্দধাম ব্রিজ পর্যন্ত খালের দুই পাড় দখল করে গড়ে উঠছে কাঁচা-পাকা নানা স্থাপনা। এরমধ্যে বেশিরভাগই পাকা দোকান ঘর নির্মাণ হচ্ছে। এলাকার প্রভাবশালীরা খালের জমি দখল করে দোকানপাট নির্মাণ করে তা ভাড়া দিচ্ছে। এছাড়া বেশ কিছু বসতবাড়ি ও একটি বিনোদন কেন্দ্রও গড়ে তোলা হয়েছে খালের জায়গা দখল করে। ফলে দিনদিন নাব্যতা হারাচ্ছে খালটি।

সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪২৫ জন দখলকারীর নাম উল্লেখ করে একটি তালিকা তৈরি করেছে। তবে চুড়ান্ত এ তালিকা প্রস্তুত হলেও অসোন্তষ রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। অনেকের অভিযোগ, প্রশাসন এখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।  

আলমডাঙ্গা শহরের বাসিন্দা হামিদুল ইসলাম আজম বাংলানিউজকে জানান, দখলদারদের এ দৌরাত্ম্য অল্পদিনের নয়। বরং এক যুগেরও বেশি সময় ধরে খালটির দুই পাড় অবাধে দখল হচ্ছে। এসব দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া দুঃখজনক।  

স্থানীয় পরিবেশবিদ পিন্টু রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এতো পাকা স্থাপনা রাতের আধারে নির্মাণ হয়নি। অবশ্যই দিনের আলোতেই গড়ে উঠছে। সবার সামনে এত বড়বড় পাকা স্থাপনা গড়ে উঠলো অথচ প্রশাসনের চোখেই পড়েনি।

অপরদিকে দখলকারীর তালিকায় নাম থাকা লিটন আলীর দাবি, তারা সরকারকে রাজস্ব দিয়ে জমি বর্গা নিয়ে তবেই স্থাপনা গড়ে তুলেছেন। আগামীতেও সরকারি নিয়ম মেনে তারা এখানে বসবাস করতে চান।

আরেক দখলকারী সুরোজ আলী বাংলানিউজকে জানান, প্রথম এক বছর তিনি সরকারকে রাজস্ব দিয়েছেন। তারপর থেকে আর রাজস্বপত্র জমা নেওয়া হয় না। যদি সরকারি কোনো নিয়মনীতি থাকে তাহলে সেসব নিয়ম মেনে তিনি রাজস্ব দিয়েই সেখানে বাস করতে চান।  

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, দখলদারদের চিহ্নিত করার পর ইতোমধ্যে ৪২৫ জন অবৈধ দখলকারীর নাম উল্লেখ করে একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড, চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের কার্যালয় ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

আলমডাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, অবৈধ এসব স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য মেশিনসহ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসের প্রয়োজন রয়েছে। তা সম্পন্ন করতে ইতোমধ্যে বিআইডাব্লিউটি’র কাছে বরাদ্দ চেয়ে একটি চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পাওয়া গেলেই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ