ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দুই যুগ ধরে সুগন্ধি দেন আতর আলী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৯
দুই যুগ ধরে সুগন্ধি দেন আতর আলী আতর আলী

বাগেরহাট: বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা। বাগেরহাট খানজাহান আলীর (রহ.) মাজার গেট থেকে বের হয়েই দেখা মিললো অদ্ভুত পোশাকধারী এক যুবকের। মুখে দাড়ি, মাথায় পাগড়ি, গলায় কয়েক ধরনের পাথরের মালা। হাতে ও ঘাড়ে কয়েকটি বোতল ও টিফিন কেরিয়ারের মত দেখতে একটি স্টিলের পাত্র। ঢেউ খেলা সুন্দর একটি লাঠিকে বোগলদাবা করে রেখেছেন। সবুজ রংয়ের পাঞ্জাবি এবং ঘাড়ের ওপর লাল কাপড় বেশ ভালই লাগছিল। 

প্রথমে দেখে বুঝতে না পেরে কাছে যাই কথা বলার জন্য। নিজের পরিচয় না দিয়ে জানতে চাই কি করেন।

সঙ্গে সঙ্গে তার হাতের আঙ্গুল আমার হাতে ঘসা দিলেন। বেশ সুগন্ধ বের হলো।  

এবার তিনি বললেন, আমি আতর দেই। বুঝতে না পেরে বললাম আতর দেন মানে কি? তখন সে বলল আপনার হাতে যেভাবে আতর মেখে দিয়েছি, এভাবে মানুষের হাতে আতর মেখে দেই। ২৪ বছর ধরে এভাবে দেশের বড় বড় মেলায় মানুষকে আতর দিয়ে আসছি।

এতোক্ষণ যার কথা বলছিলাম তার নাম আতর আলী। পটুয়াখালী জেলার তেলিখালি এলাকার জাহাঙ্গীর আলম আতর আলী শাহ এর বড় ছেলে। পাঁচ ভাই বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে আতর আলীর সংসার। বাবার বড় ছেলে হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই সংসারের হাল ধরতে হয় আতর আলীকে। বয়স ত্রিশের কাছাকাছি হলেও ছোটবেলা থেকে বাবার সঙ্গে সঙ্গে তিনিও মানুষের হাতে আতর মেখে দিতে শুরু করেন। এসময় মানুষ খুশি হয়ে তাকে ১০/২০ টাকা দেয়, এছাড়া পছন্দ হলে কেউ কেউ আবার আতর কিনেও নেন। এ দিয়েই চলে তার সংসারের সদস্যদের ভরণপোষণ। এভাবে তিনি প্রায় ২৪ বছর ধরে দেশের ৩৬০ আউলিয়ার মাজারে মেলার সময় মানুষের হাতে  আতর মাখিয়ে আসছেন।  
 
আতর আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাবা ৪৫ বছর ধরে এভাবে মানুষের হাতে আতর দিয়েছেন। বাবার সঙ্গে থেকে আমিও এ কাজ শিখেছি। দেশের যেখানেই পীর-আউলিয়াদের মাজারে মেলা হয় আমি সেখানে যাই। মানুষদের আতর দেই। অনেকে আতরের ঘ্রাণ পছন্দ হওয়ায় ছোট কাঁচের বোতলে আতর কিনেও নেন পরে ব্যবহারের জন্য। প্রতিদিন এক থেকে দুই হাজার আয় হয়। এভাবেই চলে আমাদের সংসার।

অদ্ভুত পোশাকের বিষয়ে আতর আলী বলেন, ভাল লাগে এ ধরনের পোশাক, তাই পড়ি। অনেক মানুষ এ ধরনের পোশাক দেখে কাছে আসে। আবার কেউ কেউ দূর থেকে নাক সিটকায় বলে আক্ষেপ করেন আতর আলী।

কথা শেষে যাওয়ার সময় বাংলানিউজকে ধন্যবাদ দিয়ে দোয়া চান আতর আলী।

বাংলাদেশ  সময়: ১৯২৫  ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।