ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘দেশীয় রাজাকাররাই বেশি গণহত্যা করেছে’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৯
‘দেশীয় রাজাকাররাই বেশি গণহত্যা করেছে’ সেমিনারে আগত অতিথিরা/ছবি: জি এম মুজিবুর

ঢাকা: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চালানো গণহত্যার প্রতি ৬০টির মধ্যে ৪৮টিই করেছে দেশীয় রাজাকার-আলবদর সদস্যরা। ১২টি করেছে বা করিয়েছে বিহারী গোষ্ঠীর মানুষেরা। আর ১টি গণহত্যা সরাসরি সংঘটিত করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। 

১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের গবেষণা জরিপে উঠে আসে এসব তথ্য। দেশের ২০টি জেলার মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংঘটিত গণহত্যার ওপর এ গবেষণা ও জরিপ পরিচালনা করা হয়।

 

শুক্রবার (২২ মার্চ) বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহামান সেমিনার কক্ষে 'গণহত্যা-বধ্যভূমি ও গণকবর জরিপ' শীর্ষক এক সেমিনারে জরিপের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে এসব কথা বলেন গবেষকেরা। সেমিনারে গবেষকরা তাদের গবেষণার ফলাফল ও অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।  

সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্য কবি আসাদ মান্নান। তিনি বলেন, গণহত্যা-গণকবর এগুলো শুধু এক একটি শব্দ নয়। এগুলো একেকটি ইতিহাস। যা আগামী মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ ধারণ করবে। আর এই যে জরিপ ও গবেষণা গুলো হলো, তা ভবিষ্যৎ ইতিহাসের নির্যাস।  

এসময় জরিপ কার্যক্রমের তাৎপর্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব জরিপে মিথ্যার কোনো স্থান নেই। কী যে লোমহর্ষক অবস্থা যুদ্ধের সময় হয়েছিল নতুন প্রজন্ম যারা সেগুলো দেখে নি তাদের জন্য একটি শিক্ষা। এ জরিপ আগামী দিনে বাংলাদেশকে সঠিক পথে চলতে এসব কার্যক্রম ওই দিক নির্দেশনা দেবে।  

সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের ট্রাস্টি ড. মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রথমে আমরা ১০টি জেলা নিয়ে গবেষণা করি। পরে আরও ১০টি জেলা নিয়ে গবেষণা করি। দু’টি ভিন্ন ধাপে করা গবেষণা ও জরিপ থেকে আমরা যা দেখেছি তা হলো দ্বিতীয়টিতে অনেককিছু আরও বিস্তারিতভাবে উঠে এসেছে। এর কারণ হচ্ছে গবেষণা পদ্ধতির উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের গবেষকেরা বিভিন্ন জেলায় জেলায় ঘুরে গবেষণা করেছেন। দেশের আনাচে-কানাচে এমনকি দুর্গম এলাকায় গণহত্যা হয়েছে। সেসব বর্ণনা আমাদের গবেষণায় উঠে এসেছে।  

সেমিনারে সমাপনী বক্তব্যে ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্টের সভাপতি বঙ্গবন্ধু মুনতাসীর মামুন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আমরা খুব কম জানি। এর প্রমাণ গণহত্যার জরিপ গ্রন্থমালা। কারণ এর মাধ্যমে গণহত্যা-নির্যাতনের নতুন নতুন তথ্য ওঠে আসছে। যা এতোদিন ছিল সবার অজানা। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি এসব তথ্য ও ইতিহাস মুছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কারণ এসব তথ্য উঠে এলে তাদের রাজনীতি থাকে না। এ গণহত্যার রাজনীতি থেকে বের হতে হলে সারা দেশে জরিপ পরিচালনা করতে হবে। গণহত্যা-নির্যাতনের কথা ভুলে গেলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পুরোপরি ফুটে ওঠে না। আর মুক্তিযুদ্ধ না থাকলে বাংলাদেশ থাকে না।

গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে এমন জরিপ ও গবেষণা অব্যাহত থাকবে এবং পরবর্তী ধাপে নতুন ১০টি জেলায় জরিপ পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৯
এসএইচএস/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।