ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কুষ্টিয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব উদ্বোধন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৯
কুষ্টিয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব উদ্বোধন লালন স্মরণোৎসব উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী। ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব উদ্বোধন করা হয়েছে।

বুধবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে লালন মুক্তমঞ্চে এ আনুষ্ঠানিকভাবে স্মরণোৎসব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যে ডাক দিয়েছিলেন সেই ডাকের সাড়া দিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ি।

আমরা পাকিস্তানের কোনো আদেশ মানিনি। বঙ্গবন্ধু রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে যে আদেশ দিয়েছেন সেটা মেনেছি। ’

তিনি আরও বলেন, ‘লালনের সঙ্গে মানুষের একটা আত্মার সর্ম্পক রয়েছে। লালন শাহ’র মতো মানুষকে বিশ্বের কাছে উচুঁ করে পৃথিবীর মধ্যে আরেকটা উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি। মানুষের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে, পশুপাখি, গাছপালা, প্রকৃতিকে আমাদের ভালোবাসতে হবে। তবেই আজকে লালনের এ স্মরণোৎসবে আসা স্বার্থক হবে। ’ 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বাউল সম্রাট লালন শাহ ছিলেন এক মহান সাধক। তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। অথচ তিনি দেশ ও সমাজ নিয়ে যে বাণী গুলো দিয়েছেন তা আমাকে মুগ্ধ করে। সমাজকে ভালোভাবে গড়ার জন্য কি করণীয় সে কথা তিনি বলেছেন। কীভাবে ভালো মানুষ হওয়া যায় তিনি সে কথা বলেছেন। আজকে লালনের দর্শন মানুষের মনে ধারণ করলে সন্ত্রাস, মারামারি দুর হয়ে যেতো। দেশ থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি দুর করার জন্য লালনের দর্শন সবচেয়ে সময় উপযোগী।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জ, কুষ্টিয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আ খ ম সরোয়ার জাহান বাদশা, কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এসএম তানভীর আরাফাত, জেলা পরিষদের সদস্য রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খাঁন, সাধারণ সম্পাদক আজগার আলী, কুষ্টিয়া কোর্টের জিপি অ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান মাসুম, পিপি অনুপ কুমার নন্দী, কুমারখালী পৌর মেয়র শামছুজ্জামান অরুন, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি তাইজাল আলী খান, কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ-আসকারী।  

বাউল সম্রাট লালন শাহ’র জীবনের আলোকে আলোচনা করেন লালন মাজারের খাদেম মহাম্মদ আলী।  

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আজাদ জাহান।  

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি আসলাম হোসেন।  

এবারের লালন স্মরণোৎসব আয়োজনে মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইজির অমর বানী ‘মনের গরল যাবে যখন, সুধাময় সব দেখবি তখন’ প্রতিপাদ্যে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তিন দিনব্যাপী এ লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।

মূলমঞ্চে আলোচনা সভা শেষে শুরু হয় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ’র আধ্যাত্মিক গানের আসর। যেখানে দেশ বরেণ্য লালন শিল্পী ও লালন একাডেমির শিল্পীরা লালন সংগীত পরিবেশন করেন। শুক্রবার (২২ মার্চ) পর্যন্ত চলবে এ লালন স্মরণোৎসব। সেই সঙ্গে প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত চলবে লালন মুক্তমঞ্চে লালন সংগীতের আসর এবং গ্রামীণ মেলা।  

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৯
আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।