ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৯
ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি

ঢাকা: চাকরী স্থায়ীকরণ, শাস্তিমূলক চাকরিচ্যুতি-বদলি বন্ধ, শ্রম আইন অনুযায়ী নিয়োগপত্র-বেতন-বোনাস’সহ পাওনা বেতন ভাতা এবং বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের এ অবস্থান পালন করতে দেখা গেছে।

এর মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংকের দৈনিক ভিত্তিক পিয়ন ও গার্ডরা সোমবার (১৮ মার্চ) থেকে শাস্তিমূলক চাকরিচ্যুতি-বদলি বন্ধ, শ্রম আইন অনুযায়ী নিয়োগপত্র-বেতন-বোনাসের দাবিতে অবস্থান নিয়েছে।

তাছাড়া দাবি মেনে নেওয়ার আগ পর্যন্ত কর্মসূচী পালনের ঘোষণা দিয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) আওতাভুক্ত উপজেলা কেন্দ্রীয় সমবায় সমিতি লিমিটেডের (ইউসিসিএলি) কর্মচারীরা চাকরী স্থায়ীকরণের দাবিতে মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) এবং আগামী বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) অবস্থান কর্মসূচীর ডাক দিয়েছে। ইউসিসিএলি’র কর্মচারীরা প্রেসক্লাব ছাড়াও রাজধানীর কাওরান বাজারের বিআরডিবি’র সদর দপ্তরের সামনেও অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

আর বকেয়া পাওনা পরিশোধ ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে খিলক্ষেতের নাব ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিক কর্মচারীরা। কারখানা খোলার আগ পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তারা।

গ্রামীণ ব্যাংকের দিনমজুর ভিত্তিক শ্রমিকরা তাদের দাবি সম্বলিত ৬ দফা দাবি উপস্থাপন করেছেন। উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো-অবিলম্বে দৈনিক ভিত্তিতে পিয়ন ও গার্ড হিসেবে কর্মরত সবলে কর্মচারীকে নিয়োগের ৯ মাস পর থেকে স্থায়ীকরণ করতে হবে। নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সাপ্তাহিক ছুটি, বোনাসসহ বাংলাদেশের শ্রম আইনি ও আন্তর্জাতিক শ্রমমান অনুযায়ী প্রাপ্য অধিকার দিতে হবে।  

গ্রামীণ ব্যাংকের চাকুরীবিধি অনুযায়ী মাসিক বেতন, বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন, গ্র্যাচুইটি, ঋণ সুবিধাসহ সামাজিক নিরাপত্তার যাবতীয় সুবিধা প্রদান করতে হবে। আন্দোলন ও সংগঠন দমনে শাস্তিমূলক ছাঁটাই-বদলি বন্ধ করতে হবে। চাকুরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ব্যাংকের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সরকারের নিয়মানুসারে নিয়োগ প্রদান করতে হবে।  

ইউসিসিএলি’র কর্মচারী আজকের অবস্থা কর্মসূচীতে বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমন্বিত পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচি চালু করেছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত এ কর্মসূচির তিনজন কর্মকর্তা এবং ইউসিসিএলি’র  কর্মচারীদের রাজস্ব খাত থেকে বেতন প্রদান করা হতো। ১৯৮২ সালে বিআরডিবি গঠন হওয়ার পর থেকেই এই কর্মচারীদেরকে বেতন ভাতা সরকারি তহবিল থেকে বন্ধ করে দিয়ে উপজেলা পর্যায়ের তিনজন অফিসারসহ জেলা দপ্তর ও সদর দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ভাতা চালু করে।  

‘সাত বছর আগে আবারও সরকার এই চাকরিতে জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই। মাত্র তিন অর্থবছর ৫০ শতাংশ হারে সেলারি সাপোর্ট বরাদ্দ হলেও বেতন-ভাতা বকেয়া অবস্থায় বিআরডিবির অযৌক্তিক কিছু সত্যের অধিকাংশ কর্মচারীরা তা গ্রহণ করতে পারেন নি। এ অবস্থায় ৪৭৮ টি উপজেলায় বিআরডিবির মূল কর্মসূচী ইউসিসিএলি এর ২১৩০ জন কর্মচারী দুই থেকে তিন বছর ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছে না। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আমাদের এই অবস্থান কর্মসূচি। ’

অবস্থান কর্মসূচিতে নাব ফ্যাশনের কর্মীরা বলেন, ‘আমাদের প্রায় চারশত শ্রমিক-কর্মচারীদের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন ভাতা পরিশোধ না করে কর্তৃপক্ষ ৭ মার্চ কারখানাটি তালাবন্ধ করে দেয়। আর এতে আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে বকেয়া বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বেতন ভাতা পরিশোধ ও কারখানা খুলে না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের এ অবস্থান কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে। ’

অবিলম্বে কারখানাটি খুলে দিয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধ করার জন্য সরকার ও বিজিএমইএ’র প্রতি অনুরোধও জানান তারা।

এ সকল প্রতিটি অবস্থান কর্মসূচীতে প্রায় শতাধিক শ্রমিকরা সর্বোপরি তিনশ’র বেশি কর্মচারীরা অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ০২৫৮ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৯
এমএএম/জেআইএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।