ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৯
নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশের নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রকাশিত প্রতিবেদন একপেশে উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সংবাদ সম্মেলন করে ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, বিভিন্ন সংস্থার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছিল। ওই সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে মনগড়া তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেও দাবি তথ্যমন্ত্রীর।


 
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদন নিয়ে বক্তব্য রাখেন হাছান মাহমুদ।
 
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দাবি করা হয়, নির্বাচন একপেশে হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হয়নি।
 
সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ প্রতিবেদনটি একপেশে। এটি মূলত কিছু সংস্থার পাঠানো প্রতিবেদন থেকে তৈরি হয়েছে বলে আমরা মনে করি। রিপোর্টেও সেই সমস্ত সংস্থার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আমরা এ প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করছি।
 
৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে তা অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ, উৎসবমুখর পরিবেশ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। অতীতের অনেক নির্বাচনের তুলনায় অনেক শান্তিপূর্ণ ছিল।
 
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করেছে। বিভিন্ন জরিপে আওয়ামী লীগের বিজয় নির্বাচনের আগেই উঠে এসেছিল।
 
অন্যদিকে বিএনপি প্রথম থেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিল তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা। তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেও যেভাবে প্রচরণার প্রয়োজন ছিল তা করেনি। এ নির্বাচনে বিএনপি রেকর্ড সংখ্যক, ৩০০ আসনে ৮০০ জনকে মনোনয়ন দিয়েছিল। যেটি বাংলাদেশের ইতিহাসে রেকর্ড। এটি করতে গিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে, যা দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। এ বিষয়টি রিপোর্টে আসেনি। এভাবে মনোনয়ন বাণিজ্য করার কারণে তাদের অনেক জনপ্রিয় প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছেন। এতে তাদের ব্যাপক পরাজয় হয়েছে। এটি বুঝতে পেরে তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনটাকে বিতর্কিত করা।
 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশটির ২৩ লাখ লোক কারাগারে থাকে। যেটি জনসংখ্যার আনুপাতিক হারের ভিত্তিতে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। সাদা মানুষের তুলনায় কালো মানুষের কারাগারে থাকার হার ছয় গুণ। পুলিশের গুলিতে সাদা মানুষের তুলনায় কালো মানুষের হার আড়াই গুণ। সহজেই অনুমেয় সেখানে মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন! যারা বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করতে চেয়েছিল তাদের সন্তানদের মা-বাবাদের কাছ থেকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল। এ পরিস্থিতি নিজ দেশেই সমালোচিত হয়েছে।
 
নির্বাচনের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার কথা জানিয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ রিপোর্ট কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন মন্ত্রী।
 
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি খুব ভালো দাবি করে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতি নিয়েও দেখার বিষয় আছে।
 
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সহিংসতা নিয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, একটি বড় দল নির্বাচনে পরাজয়ের ভয়ে অংশ নিচ্ছে না। এজন্য তেমন প্রতিযোগিতাপূর্ণ হচ্ছে না। তবে পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় সহিংসতাও কম হয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৯
এমআইএইচ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।