শনিবার (১৬ মার্চ) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘গণভবনে’ ডাকসুর নেতাদের সঙ্গে এ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ আহ্বান জানান।

পড়ুন>>শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব উঠে আসবে

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠানমঞ্চে ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুর, ডাকসুর জিএস ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।

‘ভবিষ্যতে দেশটাকে কিভাবে নেতৃত্ব দেবে তোমাদের সেই শিক্ষাগ্রহণের সময় এটা। কাজেই সেই ভাবে দেশকে ভালোবাসবে দেশের মানুষকে ভালোবাসবে, দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে কাজ করবে। ’

সকল শিক্ষার্থীকে সমান দৃষ্টিতে দেখার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ডাকসু নেতাদের বলেন, হারজিত থাকবে, যে জিতেছে তার দায়িত্ব আরো বেশি। যেহেতু সে জিতেছে। কে ভোট দিলো না দিলো সেটা দেখার দরকার নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের দায়িত্ব তাদের যারা জিতেছে।

তিনি বলেন, ডাকসু ও হল সংসদে যারা জয়লাভ করেছো, তোমাদের প্রত্যেকের এটাই মনে রাখতে হবে কে ভোট দিলো না দিলো ওই চিন্তা মাথা রাখবে না। ভালো কিছু করার তোমাদের দায়িত্ব।

ভবিষ্যতের নেতা খুঁজতে ডাকসু নির্বাচন দেয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২৮ বছর এই নির্বাচন বন্ধ ছিল। আমরা ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব খুঁজছি। এই নেতৃত্ব যদি ছাত্রজীবন গড়ে না ওঠে, তাহলে সেই নেতৃত্ব কতটুকু একটা দেশকে দিতে পারে? সে জন্য আমরা স্কুল থেকে এ প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। আমরা স্কুল ক্যাবিনেট শুরু করেছি। এ জন্য যেন ছোট বেলা থেকে একটা গণতন্ত্র চর্চার অভ্যাস যেন ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে গড়ে ওঠে।

তিনি বলেন, নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য এই নির্বাচন যে কত গুরুত্বপূর্ণ। যার আমরা চেয়েছি এই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে আমাদের দেশে আবার একটা সুস্থ রাজনীতির ধারা ফিরে আসবে। রাজনীতিটা করে যেন একটা নেতৃত্ব গড়ে ওঠে সেটাই আমরা চেয়েছি। আর নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্যই কিন্তু এই নির্বাচন (ডাকসু)।  

‘তারুণ্যে যে মেধা সেই মেধাটাকে আমরা দেশের কাজে লাগাতে চাই। সেই মেধাটাকে আমরা দেশের উন্নয়নের কাজে লাগাতে চাই,’ যোগ করেন শেখ হাসিনা।  

ডাকসু নির্বাচনে সহিংসতা যেন না হয় সে বিষয়ে নিজের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ডাকসু নির্বাচনে আমি সব সময় সবাইকে একটা কথাই বলেছি যে- নির্বাচনটা যেন শান্তিপূর্ণ হয়।  

তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি কঠোর নির্দেশ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ ছিল। কোনোভাবে যেন এই জাতীয় ঘটনা (অস্ত্রবাজি, বোমাবাজি) আবার ঢুকতে না পারে। আমি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে যারাই অংশগ্রহণ করলো কে ভোট পেল কে ভোট পেল না সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। আমি চেয়েছি সুন্দর একটা নির্বাচন হোক। ছাত্রছাত্রীরা যা চাইবে তাই হবে।  

ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে পরাজিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগ থেকে প্যানেল দিয়েছি, সেখানে আমাদের ভিপি জয় লাভ করেনি। আমি বলেছি জিততে যখন পারনি, যেকোনো কারণেই হোক, ঠিক আছে- যে জিতেছে তাকে গিয়ে অভিনন্দন জানাবে।  

তিনি বলেন, শোভন রাজনৈতিক পরিবারের ছেলে রাজনৈতিক শিক্ষা তার আছে বলেই সে ঠিকই বলার সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছে। এটাই হচ্ছে একজন রাজনৈতিক নেতার গুণাবলী।  

অনুষ্ঠানে ডাকসুর এজিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ নবনির্বাচিত ডাকসু ও হল সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ডাকসু ভিপি, জিএস, এজিএস ছাড়াও প্রতিটি হল সংসদ থেকে নির্বাচিত ভিপিরা বক্তব্য রাখেন।  

বক্তব্যে ডাকসু নেতারা আবাসন সংকটসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাদের দাবি দাওয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন। পরে প্রধানমন্ত্রী তাদের দাবি নোট নিয়েছেন ও পূরণের আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৯/আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা
এমইউএম/এমএ