ঢাকা, সোমবার, ৪ কার্তিক ১৪৩২, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

জাতীয়

স্বামীর খোঁজে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারালেন পারভীন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩:০৩, মার্চ ১৫, ২০১৯
স্বামীর খোঁজে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারালেন পারভীন বাঁ থেকে বেঁচে যাওয়া স্বামী ফরিদ আহমদ ও নিহত স্ত্রী হুসনে আরা পারভীন/ফাইল ছবি

সিলেট: জুমার নামাজ আদায়ে প্রতিটা শুক্রবারের মতো আজও প্যারালাইজড স্বামীকে নিয়ে মসজিদে গিয়েছিলেন হুসনে আরা পারভীন (৪২)। স্বামীকে পুরুষদের মসজিদে রেখে নিজেও যান নারীদের জন্য নির্ধারিত পাশের নামাজের স্থানে। কিছুক্ষণ পরেই শুনতে পান গুলির শব্দ। হুসনে আরা বেরিয়ে পড়েন অসুস্থ স্বামী ফরিদ আহমদের খোঁজে। ততক্ষণে স্বামী সেই নারকীয় সন্ত্রাসী হামলা থেকে কোনো মতে প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন, কিন্তু ফিরতে পারলেন না হুসনে আরা। সন্ত্রাসীর গুলিতে প্রাণ হারান তিনি।

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে শুক্রবার (১৫ মার্চ) সন্ত্রাসী হামলায় যে ৪৯ জন নিহত হয়েছেন, তাদের মধ্যে তিন বাংলাদেশির একজন এই হুসনে আরা।  

তিনি সিলেটের গোলাপগঞ্জের জাঙ্গালহাটা গ্রামের নুর উদ্দিনের মেয়ে।

তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট হুসনে আরার স্বামী ফরিদের বাড়ি বিশ্বনাথ উপজেলার ১নং মীরের চর গ্রামে।
 
হুসনে আরার প্রাণহানির খবর পেয়ে তার বাবার বাড়ি ও শ্বশুরালয়ে স্বজনদের মধ্যে আহাজারি চলছে- জানিয়েছেন তারই বোনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন।
 
তিনি বলেন, আমরা সকালেই এ দুর্ঘটনার খবর জানতে পেরেছি। ঘটনার পর থেকে কারোরই মনের অবস্থা ভালো না। পুরো বাড়িজুড়ে বিষন্নতা নেমে এসেছে।
 
দেলোয়ার হোসেন জানান, ১৯৯২ সালে ফরিদ আহমদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন হুসনে আরা। এরপর ১৯৯৪ সালে স্বামীর হাত ধরে পাড়ি জমান ‘স্বপ্নে’র দেশ নিউজিল্যান্ডে। তাদের সংসারে শিপা আহমেদ (১৭) নামে এক মেয়ে রয়েছেন।  
 
হুসনে আরার মরদেহ দেশে আনা হবে না জানিয়ে দেলোয়ার হোসেন বলেন, তার আরেক মামা (হুসনে আরার ভাই) বছরখানেক আগে নিউজিল্যান্ডে মারা গেছেন। তাকে ওখানে সমাহিত করা হয়েছে। তাই তার খালার মরদেহ আনা হবে না।
   
হুসনে আরার চাচাতো ভাই সিলেট মহানগর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এইচ আর শাকিল বলেন, হুসনে আরার স্বামী ফরিদ আহমদ বর্তমানে ক্রাইস্টচার্চ এলাকায় আত্মীয়ের বাসায় রয়েছেন।
 
তার ভগ্নিপতি মাহফুজ চৌধুরী বলেন, পুরুষ মসজিদের ভেতরে গুলির শব্দ শুনে হুসনে আরা পারভীন স্বামীর খোঁজে গেলে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাকে গুলি করলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। সেখানে অবস্থানরত স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, নিহত হুসনে আরার মরদেহ এখনও তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি নিউজিল্যান্ড পুলিশ। সর্বশেষ ২০০৯ সালে তারা বাংলাদেশে  এসেছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৯
এনইউ/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।