ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

খুলনা মহানগরীর সড়ক সংস্কার হবে কবে?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৩ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৯
খুলনা মহানগরীর সড়ক সংস্কার হবে কবে? সড়কের বেহাল দশা। ছবি: বাংলানিউজ

খুলনা: রেলিগেট থেকে গোলকধাম রাস্তায় ওয়াসার খোঁড়াখুড়ির কারণে বিগত দেড় বছর ধরে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার গর্তগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে। উত্তর বণিকপাড়া এলাকায় প্রতি বছর সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাসহ গোটা এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানি নিঃষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় এটি বছরের রুটিন দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।

বুধবার (৬ মার্চ) সকালে খুলনা মহানগরীর বণিকপাড়া এলাকার সরকারি চাকরীজীবী মোহাম্মদ অয়েজুল হক বাংলানিউজকে এসব কথা বলেন।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) পাশের ও সামনের সড়কের অবস্থা আরও নাজুক।

পশ্চিম পালপাড়া থেকে তেলিগাতি মেইন রোড হয়ে কুয়েট সড়কের বেহাল দশা। কোথাও কোথাও ছোট বড় গর্ত ও ভাঙাচুরার কারণে হঠাৎ ছোট খাটো সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি বড় দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করছে।

কুয়েটের শিক্ষার্থীরা বাংলানিউজকে বলছেন, এখানের শিক্ষা জীবন শুরু থেকেই দেখছি রাস্তা খারাপ। এখন আমাদের যাওয়ার সময়ও দেখছি একই অবস্থা। এ সড়কের আর কবে সংস্কার হবে। সড়কের বেহাল দশা।  ছবি: বাংলানিউজস্থানীয়রা অভিযোগ করেন, প্রায় ১ যুগ পেরোলেও তাদের রাস্তাগুলো সংস্কার কিংবা মেরামত হয়নি। সংস্কারের অভাবে বেহালদশা পশ্চিম টুটপাড়া প্রাইমারি স্কুল সড়কেরও।

ওই এলাকার ডালিয়া ইসলাম নামে এক গৃহবধূ বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কোনো সংস্কার না থাকায় এখন যাতায়াতে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়কটি। ফলে যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ রোগীদের এ সড়ক দিয়ে যেতে সীমাহীন দুর্ভোগে শিকার হতে হয়।

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এই এলাকায় কোনো রিকশাচালক আসতে চান না। এলেও বেশি ভাড়ায় আসেন।

নগরীর ফারাজীপাড়া প্রধান সড়কে ধীরগতিতে রাস্তা সংস্কারের ফলে জনসাধারণের দুর্ভোগ বাড়ছে। এছাড়া মহানগরীর শামসুর রহমান রোড, পাওয়ার হাউজের মোড়, মিস্ত্রীপাড়া আরাফাত মসজিদের সামনে থেকে দারুলউলুম মাদ্রাসা পর্যন্ত সড়ক, ৩১ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু সড়কের বেহাল দশার কারণে ভোগান্তি বেড়েছে এলাকাবাসীর।

তাদের অভিযোগ, রাস্তা সংস্কারে যেন কোনো মাথা ব্যথাও নেই  নগর কর্তৃপক্ষের। এ অবস্থায় রাস্তায় চলাচল করতে সাধারণ মানুষদের যেমন চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে তেমনি যানবাহন চালকদেরও পড়তে হচ্ছে বিপাকে। বর্ষা মৌসুমের আগে রাস্তা সংস্কার করা না হলে মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকবে না।

সড়ক সংস্কার করে দ্রুত ভোগান্তি লাঘবের দাবি তাদের।

সচেতন মহল বলছেন, দায়সারাভাবে রাস্তার কাজ করার কারণে প্রতি বছর বৃষ্টি হলেই খানাখন্দক ও ভাঙাচুরা রাস্তায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় সাধারণ মানুষের। ওয়াসার খোঁড়াখুড়ি চলছে, ছবি: বাংলানিউজনিরাপদ সড়ক চাই’র (নিসচা) খুলনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমান মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর মানুষের প্রত্যাশা ছিলো দ্রুত বেহাল সড়কগুলো সংস্কার হবে। কিন্তু তা এখনও হয়নি। বরং ভালো সড়কগুলো ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে আরও শোচনীয় অবস্থায় উপনীত হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১১ সাল থেকে খুলনায় ওয়াসার রাস্তা খোঁড়াখুঁড়িতে রীতিমতো বিরক্ত নগরবাসী। চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নিয়মিত বিভিন্ন সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি হলেও সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে নগরবাসীর দুর্ভোগ বাড়ছে দিন দিন। একই সড়ক বারবার কাটা ও দীর্ঘদিন পর্যন্ত সংস্কার না করে রেখে দেওয়ায় ভোগান্তির মাত্রা বেড়েই চলছে।

ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি দ্রুত শেষ করে রাস্তা সংস্কারের দাবি জানান তিনি।

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নে ৮২৩ কোটি এবং সড়ক মেরামত ও উন্নয়নে ৬০৮ কোটি টাকার দু’টি প্রকল্পের কাজ এপ্রিল মাসে শুরু করবে  সিটি করপোরেশন। ৪ বছর মেয়াদী এ প্রকল্প দু’টি বাস্তবায়ন হলে নগরবাসীর দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ও চলাচলের যে ভোগান্তি তা লাঘব হবে।

বুধবার সকালে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালকুদার আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নে এবং সড়ক মেরামত ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ চলছে। আমাদের এ বছরের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে কত বরাদ্দ হবে তার চিঠি পেলেই টেন্ডারের আহ্বান করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৯
এমআরএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।