ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘টিআইবি একচোখা হবে, এমনটা আশা করি না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ৫, ২০১৯
‘টিআইবি একচোখা হবে, এমনটা আশা করি না’ দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন জেনেভাভিত্তিক নীতি ও কৌশল বিশেষজ্ঞ ম্যাথিয়াস বস। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ট্র্যান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশ-টিআইবির ‘একচোখা’ দৃষ্টিভঙ্গি বা অবস্থান আশা করেন না বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে  জেনেভাভিত্তিক নীতি ও কৌশল বিশেষজ্ঞ ম্যাথিয়াস বসের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।  

এ সময় দুদক চেয়ারম্যানের কাছে টিআইবির কার্যক্রম, সংস্থাটি সম্পর্কে এ দেশের জনগণের ধারণা, দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে সম্পর্কসহ সুচিন্তিত মতামত, সমালোচনা এবং পরামর্শ জানতে চান প্রতিনিধি দলের প্রধান ম্যাথিয়াস বস।

 

জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, জনগণের মাঝে টিআইবির ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে। তবে এর কিছু সমালোচনাও শোনা যায়। টিআইবি দেশের শাসন প্রক্রিয়া তথা সরকার বা সরকারি সংস্থার যেকোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতিতেই উচ্চকণ্ঠ থাকে।  

তিনি বলেন, শুধু সম্যসা বা ত্রুটি তুলে ধরা টিআইবির কাজ হতে পারে না। বরং এসব সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেয়ার সুযোগ তাদের রয়েছে। সমস্যা শনাক্তকরণের পাশাপাশি এর কারণ এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় বের  করা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হওয়া উচিত।
 
‘সরকারি-বেসরকারি এমনকি বৈদেশিক অর্থে পরিচালিত প্রতিটি সংস্থারই অর্থের মালিক জনগণ। তাই টিআইবিসহ প্রতিটি সংস্থার বাজেট, আয়-ব্যয়ের হিসাব স্বচ্ছ থাকা উচিৎ। ’
 
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, তাদের আয়-ব্যয়, কর্মপরিকল্পনা, অডিট কার্যক্রম  শুধু ওয়েবসাইটে না রেখে গণমাধ্যমসহ  অন্যান্য মাধ্যমেও মানুষকে অবহিত করা উচিৎ।

‘দুর্নীতি দমন কমিশনের সঙ্গে টিআইবির আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক  উভয় প্রকার সম্পর্ক রয়েছে। তবে অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলতে চাই না, কারণ এটা বেশ ফলপ্রসূ। আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সাথে কমিশনের দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং উত্তম চর্চার বিকাশে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এই সমঝোতা স্মারকের আলোকেই টিআইবির সাথে যৌথভাবে গণশুনানিসহ বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ’

তিনি বলেন, কার্যক্রম নিয়ে টিআইবির সমালোচনাকে দুদক সবসময় সাধুবাদ জানায়। তবে দুদক বা অন্য কোনো সংস্থার সমালোচনা করতে হলে তাদের দেশের সমসাময়িক বাস্তবতা, পরিস্থিতি এবং সংস্কৃতিকে অনুধাবন করতে হবে। সমালোচনার সাথে পরিত্রাণের উপায়ও বলতে হবে। সরকার বা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক দল কোনো ভালো কাজ করলে তার প্রশংসাও করা উচিৎ। তাদের একচোখা হলে চলবে না, দুচোখা হতে হবে।

‘টিআইবি যাদের অর্থায়নে পরিচালিত হয় তাদের অবশ্যই প্রত্যাশা থাকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সুশাসনের উন্নয়নে টিআইবি ভূমিকা রাখবে। টিআইবি সরকার ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাসমূহকে আনুষ্ঠানিক  কিংবা অনানুষ্ঠানিকভাবে পরামর্শ দিতে পারে,’ যোগ করেন দুদক চেয়ারম্যান।  

টিআইবির গবেষণা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, টিআইবির গবেষণার মেথডোলোজি স্বচ্ছ হতে হবে। তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাধ্যমিক ডাটা ব্যবহার করে অথবা ফোকাসগ্রুপ আলোচনার মাধ্যমে ডাটা সংগ্রহ করে। তাদের উচিৎ প্রাথমিক ডাটা ব্যবহার করা। তাহলে তাদের গবেষণার ফলাফল ও  বিশ্লেষণে ত্রুটি কম থাকবে এবং তাদের প্রতিবেদনের  বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়বে।  

সিপিডি, বেলাসহ অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে টিআইবির যৌথ সম্পর্কের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন,  এসব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশের পরামর্শক মাহিন সুলতান এবং টিআইবির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার জাফর সাদিক।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৯
আরএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।