ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৯
নির্বাচনকে যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: নির্বাচনকে তার যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। না হলে রাজনৈতিক দল শুধু নির্বাচনে নয়, রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

রোববার (০৩ মার্চ) ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে রাশেদ খান মেনন এ মন্তব্য করেন।

মেনন বলেন, স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ থাকে।

কিন্তু সংসদ সদস্যসহ দলীয় নেতারা হুমকি দিয়ে বলছেন ‘ভোটতো দেখছ, তোমরা ভোট দিয়ে কি করবে’। এধরনের হুমকি-ধামকি করে তখন সামগ্রিক নির্বাচন সম্পর্কে জনগণের অনাস্থার জন্ম হয়। এরইমধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে প্রার্থী হতে বাধা, মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলা, উপরের মহলের ক্লিয়ারেন্স আছে কিনা, প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের এধরনের ঔদ্ধত্যমূলক প্রশ্ন, সন্ত্রাস, টাকা ছড়ানো-এসব উদ্বেগজনক খবর সম্প্রতি নির্বাচন সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। তা থেকে নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে তারা অনাগ্রহী হয়ে পড়েছে। এই ধারণার অবসান ঘটাতে উপজেলা নির্বাচনকে অবশ্যই অবাধ, নিরপেক্ষ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা সবক্ষেত্রে সুখকর নয়। বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে এলেও নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করার কৌশলই তারা নির্বাচনে প্রয়োগ করেছে। তারেক রহমানের নির্বাচন বাণিজ্যের কারণে তারা নির্বাচনে কার্যকর প্রার্থী দেয়নি, প্রচারে অংশ নেয়নি। পোলিং এজেন্ট দেয়নি। এখন তারা বিভিন্ন অনিয়মের কথা বলছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অতি উৎসাহী প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বাড়াবাড়ি করতে পারে। কিন্তু তাতে এই নির্বাচন অবৈধ হয়ে যায় না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দল অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন ও জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের যে আন্দোলন করে আমরা সফলতা অর্জন করেছিলাম, তা যেন এভাবে হারিয়ে না যায়, সে ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। না হলে রাজনৈতিক দল নির্বাচন কেবল নয়, রাষ্ট্র পরিচালনার প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলবে। নির্বাচনকে তার যথাযথ মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে।  

মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ দলের শরিকদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে বলেছেন। যদি গণতান্ত্রিক স্পেস না থাকে তাহলে কেউ এগিয়ে যেতে পারবে না। সেই স্পেস তৈরি করতে হবে।  

চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চকবাজারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এতোগুলো প্রাণ গেলো। নিমতলীর ঘটনার পর যদি কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হতো তাহলে এই ধররের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতো না। এখন আমরা এই ঘটনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছি। শুধু তাই নয়, একে অপরের উপর দোষারোপ করছি। যে কোনো ঘটনার এই ব্লেমগেম এর অবসান হওয়া প্রয়োজন।  

ব্যাংকিংখাতের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত দশ বছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ক্রমে বৃদ্ধি করা হলেও অর্থনীতির উপর লুটেরা ধনীকদের একাধিপত্য আরও শক্তভাবে চেপে বসেছে। এর পরিণতি হচ্ছে বিনিয়োগ না করে বিদেশে অর্থপাচার, ঋণখেলাপি সংস্কৃতির বিস্তার, ব্যাংকিংখাতে নৈরাজ্য, শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি ইত্যাদি। এগুলো রোধে বিভিন্ন আইন করা হলেও তার কার্যকর কোনো প্রয়োগ নেই। ব্যাংকিং আইনের সংশোধন করে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে পারিবারিক মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। একই ব্যক্তি এখন ৬/৭টি ব্যাংকের মূল শেয়ার হোল্ডার। এক বা একাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন নামে ব্যাংকের টাকা সরিয়ে নিচ্ছে। এই লুটেরাদের একটি শ্রেণী কানাডা, থাইল্যান্ডে সেকেন্ড হোম বানাচ্ছে। এই দুর্নীতিকে কঠোর হাতে দমন করতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৯ 
এসকে/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।